হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী।—ফাইল চিত্র।
হাওড়া পুরসভায় নতুন করে ৪০০ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় পুর বোর্ডের মেয়াদ শেষের আগেই আয়-ব্যয়ের হিসেব প্রকাশ করতে চান মেয়র রথীন চক্রবর্তী। মেয়রের বক্তব্য, ২০১৬ সালে রাজ্য অর্থ দফতরের নির্দেশ মেনে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে মূলত পুরসভায় স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকায়। ওই কর্মীদের বেতনও দেওয়া হচ্ছে পুরসভার নিজস্ব আয় থেকে। সুতরাং, এ নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই। মেয়র বলেন, ‘‘গত চার বছরে বোর্ডের প্রতিটি সিদ্ধান্তই মেয়র পরিষদের বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে নেওয়া হয়েছে। ৬৬টি ওয়ার্ডের পুরসভা চালাতে কর্মী নিয়োগ না করে উপায় ছিল না। এ জন্যই হাওড়ার এত উন্নতি হয়েছে।’’
আগামী ১০ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে হাওড়া পুরসভার তৃণমূল-শাসিত বোর্ডের মেয়াদ। এর আগে গত নভেম্বর মাসে পুরসভায় প্রায় ৪০০ জন কর্মীকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। তা নিয়ে পুর কমিশনারের সঙ্গে পুর বোর্ডের বিবাদ প্রকাশ্যে চলে আসে। পুর কমিশনারের বক্তব্য ছিল, হাওড়া পুরসভায় এমনিতেই আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। এর মধ্যে ওই কর্মীদের বেতন দিতে যে অতিরিক্ত ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হবে, তা পুরসভার নেই। পুর কমিশনার ওই কর্মীদের নিয়োগপত্রে সই না করায় তাঁদের বেতন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
বুধবার ছিল ওই বোর্ডের শেষ (৩২তম) সাধারণ সভা। সেই সভায় অস্থায়ী কর্মীদের বেতন সুনিশ্চিত করতে মেয়র একটি প্রস্তাব পেশ করেন। তাঁর প্রস্তাব ছিল, ব্যাঙ্কে পুরসভার যে ৭৫ কোটি টাকা রয়েছে, তার মধ্যে ২০ কোটি টাকা ওই বেতন বাবদ বরাদ্দ করা হোক। এ ব্যাপারে বর্তমান বোর্ডকে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাতে অনুরোধ করেন তিনি। সেই প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায়। পাশাপাশি, ওই সভায় হাওড়ার ফুটবলার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি রাস্তা ও অভিনেতা তুলসী চক্রবর্তীর নামে দু’টি রাস্তার নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সাধারণ সভার পরে মেয়র জানান, গত চার বছরে হাওড়া পুরসভা কী কাজ করেছে ও কত টাকা খরচ করেছে, সেই হিসেব মানুষকে জানানো বোর্ডের কর্তব্য। এতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে। তিনি বলেন, ‘‘গত চার বছরে পুরসভা প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। যেখানে গত বাম বোর্ড আয় করেছিল মাত্র ৬৪ কোটি টাকা। ৫০ কোটি টাকার আলো লাগিয়েছি আমরা। আয়-ব্যয়ের সমস্ত হিসেব আমরা সকলের সামনে প্রকাশ করতে চাই।’’ মেয়রের দাবি, পুর বোর্ড যে উন্নয়ন করেছে, তাতে অস্থায়ী কর্মীদের বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই আগামী দিনে তাঁদের চাকরির স্থায়িত্বও বজায় থাকবে।