ঘাতক বাস।—নিজস্ব চিত্র
সিসিটিভিতে নজর রাখতে গিয়ে হঠাৎই চমকে উঠেছিলেন উল্টোডাঙা ট্রাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্মী। রাস্তায় মাথা থ্যাঁতলানো অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বছর চল্লিশের এক মহিলা। আর বেপরোয়া গতিতে উল্টোডাঙার দিকে পালিয়ে যাচ্ছে একটি সাদা রঙের বাস। শনিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ উল্টোডাঙা হা়ডকো মোড়ের কাছে চোখের সামনে এই দুর্ঘটনা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারাও।
সঙ্গে সঙ্গে ওয়াকিটকিতে খবর যায় ট্রাফিক গার্ড থেকে সার্জেন্টদের কাছে। মোটরবাইকে চেপে ওই বাসটির পিছু নেন ওই মোড়ে কর্তব্যরত সার্জেন্ট অমিত সাউ-সহ আরও কয়েক জন পুলিশকর্মী। তবে গতি বাড়িয়েও খুব বেশি দূর যেতে পারেনি বাসটি। উল্টোডাঙা থানার কাছে উল্টোডাঙা মেন রোডে বাসটিকে ধরে ফেলে পুলিশ। তখন চালক পালিয়ে গেলেও খালাসিকে আটক করে মানিকতলা থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে চালক থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে পরে দু’জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
কী ভাবে ঘটল দুর্ঘটনা? পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সনিয়া বসু (৪৩) নামে ওই মহিলার। তাঁর ব্যাগ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পরিচয়পত্র বার করে তাঁর পরিচয় জানা সম্ভব হয়। তাঁর বাড়ি যাদবপুরের এনএসসি বসু রোডে। তাঁর দেহাংশ কোনও রকমে প্লাস্টিকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কেন তিনি উল্টোডাঙায় গিয়েছিলেন, তা এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, গড়িয়া থেকে ডানকুনিগামী ওই বাসটি ই এম বাইপাস থেকে উল্টোডাঙার দিকে আসছিল। মূল মোড় থেকে দুর্ঘটনাস্থল একটু দূরে হওয়ায় ওই জায়গায় কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না। কী ভাবে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা সিসিটিভিতে প্রথমে নজরে আসেনি। এক প্রত্যক্ষদর্শী শৈলেন যাদবের কথায়, ‘‘হঠাৎই বাসটি দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার পর দেখি মহিলা রাস্তায় পড়ে আছেন।’’ পুলিশের দাবি, ওই জায়গায় রাস্তা পেরোনোর কোনও সুযোগ ছিল না। এমনকি বাস দাঁড়ানোর স্টপও ছিল না। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, মাঝ রাস্তায় ওই মহিলা বাসটি থামাতে গেলে তা বেপরোয়া ভাবে পাশ কাটাতে গিয়ে তাঁকে চাপা দিয়ে চলে যায়।