প্রতীক্ষা: আজও এই দোকানগুলির দরজা খোলেনি। —নিজস্ব চিত্র।
পাশাপাশি দু’টি পুরসভা। দু’জায়গাতেই স্টেশনের কাছে লাইনের উপর দিয়ে উড়ালপুল তৈরি হয়েছে। কিন্তু ছবিটা ভিন্ন। মধ্যমগ্রামে হকারদের বসার ব্যবস্থা হয়েছে। তাই সেখানে যানজট নেই। বারাসতে হকারদের পুনর্বাসনের জন্য দোকান তৈরি হয়েও তা এখনও বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে রাস্তায় বসছেন হকাররা। ঘিঞ্জি এলাকা দিয়ে কার্যত যাতায়াতেরও উপায় নেই। অথচ এ নিয়ে হেলদোল নেই রেল বা বারাসত পুর কর্তৃপক্ষের।
বারাসত ১২ নম্বর রেলগেটের উপর দিয়ে উড়ালপুল হয়েছে বছর সাতেক আগে। ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, যশোর রোডের চাঁপাডালি মোড় থেকে ওই উড়ালপুল ধরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, কৃষ্ণনগর রোডের কলোনি মোড়ে যাওয়া যায়। উড়ালপুল তৈরির সময়ে চাঁপাডালি মোড় থেকে হরিতলা হয়ে কলোনি মোড় পর্যন্ত সমস্ত ছোট-বড় দোকান এবং হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, উড়ালপুল তৈরির পরে তাঁদের পুর্নবাসন দেওয়া হবে। সে কাজ আজও হয়নি।
ওই উড়ালপুল দিয়ে সাইকেল, রিকশা, অটো এবং টোটো চলাচল নিষিদ্ধ। চাঁপাডালি থেকে কলোনি মোড়ের দিকে যাওয়ার কোনও আন্ডারপাস নেই। রেললাইনের জন্য কার্যত দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে বারাসত। রোগী নিয়েও অনেক ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয় মানুষকে।
উড়ালপুল তৈরির আগে চাঁপাডালি মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত প্রায় দেড়শো দোকান ছিল। এখন তা ২২০ ছাড়িয়েছে। বারাসত পুরসভার পক্ষ থেকে ১৭৫টি দোকানঘর তৈরি করা হলেও অধিকাংশই বিলি হয়নি। নান্টু সরকার নামে এক দোকানির অভিযোগ, ‘‘প্রতিশ্রুতি মতো দোকান মেলেনি। ফলে অনেকেই রাস্তায় পসরা নিয়ে বসছেন।’’ অনন্ত হিতবর নামে এক দোকানির অভিযোগ, বারবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
আরও দুরবস্থা রেলগেটের অন্য দিক থেকে কলোনি মোড় পর্যন্ত। এখানে প্রায় ২০০ জন দোকানির পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থাই হয়নি। গোটা রাস্তা জুড়ে বসে পড়েছেন হকাররা। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এলাকায় ভাল বাজার এটি। কিন্তু এত ভিড়ে যেতেই ভয় লাগে।’’
মধ্যমগ্রাম পুর এলাকায় রেলগেটের উপরে উড়ালপুল হওয়ার সময়েও সরানো হয়েছিল হকার। কিছু হকারকে অন্যত্র জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিছু হকারকে উড়ালপুলের নীচে মাঝ বরাবর বসানো হয়েছে। দু’পাশ দিয়েই মধ্যমগ্রাম স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন যাতায়াত করতে পারে। কিন্তু বারাসতে তা হচ্ছে না কেন? বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেললাইনের এক পাশ থেকে চাঁপাডালি মোড় পর্যন্ত দোকানঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। রেলগেট থেকে কলোনি মোড় অংশে দোকান তৈরির দরপত্র চাওয়া হয়েছে। সেগুলি হয়ে গেলে এক সঙ্গে সবাইকে দেওয়া হবে।’’