Mysterious Death Of A Woman In Kolkata

বস্তির ঘর থেকে উদ্ধার মহিলার দেহ, খুনের অভিযোগ আত্মীয়দের

মৃতার এক আত্মীয়া জাহানারা খান জানান, তাঁরা আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বিয়ের পরে আনজুয়ারা ওই বস্তিতে একাই থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ছিল না তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:১৬
Share:

আনজুয়ারা খাতুন মোল্লা আরা। —ফাইল চিত্র।

এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল খিদিরপুরের কাছে কলকাতা বন্দরের
(সিপিটি) কলোনিতে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে। এ দিন দক্ষিণ বন্দর থানার পুলিশ সিপিটি কলোনির বস্তির ঘর থেকে ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করে। মৃতার নাম আনজুয়ারা খাতুন মোল্লা আরা (৪৩)। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা পুলিশের। মৃতার বিছানা থেকে লালচে দাগ ধরা একটি বালিশ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না আনজুয়ারার স্বামীর। পরিজনদের অভিযোগ, ওই মহিলাকে খুন করেছেন তাঁর স্বামীই। অভিযোগের ভিত্তিতে আপাতত খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর আসল কারণ স্পষ্ট হবে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ ওই বস্তির একটি ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় মেলে আনজুয়ারার দেহ। শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও মৃত্যুর আগে বিছানায় যে কোনও কারণেই হোক তিনি প্রস্রাব করে ফেলেছিলেন বলে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন। উদ্ধার হওয়া বালিশটিও সন্দেহ বাড়িয়েছে পুলিশের। তাদের ধারণা, মহিলাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

মৃতার এক আত্মীয়া জাহানারা খান জানান, তাঁরা আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বিয়ের পরে আনজুয়ারা ওই বস্তিতে একাই থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ছিল না তাঁর। এই নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। জাহানারা বলেন, ‘‘আমার বোনের মেয়ে আনজুয়ারা। মামলায় জামাই হেরে যায়। তার পর থেকে সে আনজুয়ারার কাছে মাঝেমধ্যে আসত। আমাদের সেটা পছন্দ ছিল না। গত শনিবারেও জামাই এসেছিল। এই ঘটনার পরে ওর ফোন বন্ধ। জানি না, কী ভাবে এত কিছু ঘটে গেল।’’

Advertisement

খিদিরপুর রেল স্টেশনের কাছে রয়েছে ওই কলোনি। সেখানে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকতেন আনজুয়ারা। বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন তিনি। এ দিন সকালে বহু ক্ষণ আনজুয়ারার ঘরের দরজা বন্ধ দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা ওই মহিলার এক আত্মীয়াকে খবর দেন। তিনি এসে দেখেন, আনজুয়ারার ঘরের দরজা খোলা। বিছানায়
শুয়ে আছেন তিনি। কিন্তু দেহে সাড় নেই। এই ঘটনা জানাজানি হতেই বস্তিতে চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আনজুয়ারার দেহ উদ্ধার করে।

স্থানীয় বস্তিবাসীদের একাংশেরও অভিযোগ, আনজুয়ারা খুন হয়েছেন। জাহানারা অবশ্য জানান, আনজুয়ারার জন্ডিস হয়েছিল। তার চিকিৎসা চলছিল। কুলপিতে তাঁর আত্মীয়েরা ফোনে আনজুয়ারাকে সেখানে চলে যেতে বলেন। কিন্তু চিকিৎসা না করিয়ে তিনি যেতে রাজি হননি। পুলিশ জানায়, আনজুয়ারার স্বামী কাকদ্বীপে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন। হাওড়ার ধূলাগড়ে তিনি কাজ করেন। আনজুয়ারার সঙ্গে মাঝেমধ্যে এসে থাকতেন ওই ব্যক্তি। তাঁর খোঁজ চলছে।

জাহানারা জানান, এ দিন সকালে জলের গাড়ি বস্তিতে জল দিতে এলে প্রতিবেশীরা আনজুয়ারার দরজার কড়া নাড়েন। কিন্তু তাঁর সাড়া মেলেনি। জাহানারা বলেন, ‘‘আমি ওর ঘরে পৌঁছে দরজায় ধাক্কা দিয়ে বুঝি, দরজা খোলা রয়েছে। ওকে ঘুমোতে দেখে নাম ধরে ডাকলেও সাড়া দেয়নি। তার পরে নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখি, নিঃশ্বাস পড়ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন