দুরবস্থা: বেলগাছিয়া এলআইজি হাউসিং কমপ্লেক্সের ফ্ল্যাটগুলির বেহাল দশা। নিজস্ব চিত্র
কখনও ভেঙে পড়ছে বারান্দার একাংশ, কখনও আবার জানলার কার্নিশ। সেই ঝুঁকি মাথায় নিয়েই বসবাস করতে হচ্ছে সরকারি আবাসনে। বেলগাছিয়া এলআইজি হাউসিং কমপ্লেক্সের একাধিক ফ্ল্যাটের অবস্থার নিরিখে এমনই অভিযোগ সেখানকার বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দাদের। বিভিন্ন জায়গায় চাঙড় খসে পড়লেও আবাসন সংস্কারের ব্যাপারে সরকারি দফতর উদাসীন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।
সম্প্রতি একটি বারান্দার শেড-সহ সিমেন্টের চাঙড় খসে পড়লে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন আবাসনের ‘জে’ ব্লকের বাসিন্দা কাবেরী মৈত্র। কাবেরী জানান, ছেলে বাড়ি ফিরল কি না, তা দেখতে তাঁর দোতলার ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে নীচের দিকে ঝুঁকেছিলেন তিনি। মাথা সরিয়ে নেওয়ার পরেই তিনতলার বারান্দার একাংশ ভেঙে নীচে পড়ে। কাবেরী বলেন, ‘‘সময়ের একটু হেরফের হলে চাঙড় আমার মাথার উপরেই পড়ত। দুপুরের সময় বলে ভাগ্যিস কেউ রাস্তা দিয়েও যাচ্ছিলেন না।’’ চারতলার ফ্ল্যাটের বাসিন্দা, ৭৯ বছরের বটকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘তিনতলার ফ্ল্যাটের বারান্দার একাংশ ভেঙে পড়ার পরে আমাদের ফ্ল্যাটের বারান্দায় যাওয়ার সাহস হচ্ছে না।’’
ওই আবাসনের অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস সেন জানান, আবাসনের একাধিক ব্লকের সংস্কারের দাবিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বড় বাড়ির ফ্ল্যাটগুলির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। পরিদর্শনের পরে ‘ই’, ‘এফ’, ‘জি’ এবং ‘জে’ ব্লকের সংস্কারের জন্য অর্থ দফতরের কাছে প্রয়োজনীয় খরচ চেয়েছিল আবাসন দফতর। ‘জে’ ব্লকের বাসিন্দা শুভদীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘পরিদর্শন ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয়নি।’’
এ বিষয়ে আবাসন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা যাতে না হয়, সেজন্য আবাসনের ফ্ল্যাটের যে সকল অংশ বিপজ্জনক তা ভেঙে দেওয়া হবে। এ বার টাকা পেলে সারিয়ে দেব!’’ যার প্রেক্ষিতে আবাসনের এক বাসিন্দা সৌরভ ঘোষ বলেন, ‘‘ফ্ল্যাটের বাইরের অংশ মেরামতি করার এক্তিয়ার আমাদের নেই। যত সময় নষ্ট হচ্ছে ততই বিপদ বাড়ছে।’’
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আবাসনের বাসিন্দারা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। সংস্কারের কাজ দ্রুত যাতে শুরু হয় সে ব্যাপারে বাসিন্দাদের আর্জি যথাস্থানে জানিয়েছি।’’