অনাদৃত: বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পার্কের এমনই দশা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
রাজনৈতিক টানাপড়েনেই কি থমকে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পার্কের সংস্কার! এলাকার বাতাসে কান পাতলে তেমনই শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে মাঝামাঝি থেকে একাধিক বার পুরসভার তরফে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পার্ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। ৬৫ এবং ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তে অবস্থিত পার্কটি। আর তাই শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর টানাপড়েন রয়েছে একে ঘিরে। তেমনই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, শাসক দলের গোষ্ঠীবিবাদের কারণেই বারবার থমকে যাচ্ছে ফাঁড়ি পার্কের সংস্কার।
যদিও রাজনৈতিক কারণের প্রসঙ্গ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এ সব কারণ অর্থহীন বলেই দাবি তাঁদের। পুরসভা সূত্রের খবর, পার্কটির সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাতে বাদ সেধেছে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)। স্থানীয় এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘২০১৫ সালের জুলাই
মাস থেকে শোনা যাচ্ছে, পার্কটির সংস্কার হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছুই হয়নি। জিএসটি তো চালু হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এত দিন তবে কী হয়েছিল?’’
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমারের দাবি, আগামী আর্থিক বর্ষেই পার্কের সংস্কার শুরু হবে। পার্কটির রেলিং সংস্কার করতে লোহার প্রয়োজন। জিএসটি চালু হওয়ার কারণে প্রস্তাবিত প্রকল্পের লোহার দামে পরিবর্তন হয়েছে। সে কারণে আপাতত সংস্কারের কাজ থমকে। এমনকী, পুরসভার দরপত্রের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন হয়েছে। সে কারণে নতুন করে দরপত্র করতে হবে, জানাচ্ছেন মেয়র পারিষদ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জিএসটির কারণে দরপত্র বদল করতে হচ্ছে। পার্কের ক্ষয়ে যাওয়া রেলিংগুলো বদলানোর পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নও করা হবে।’’
তবে রাজনৈতিক টানাপড়েনের কারণে যে পার্কের সংস্কার থমকে রয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ বাসিন্দাদের একাংশ। তেমনই এক জনের কথায়, ‘‘এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি তো বোঝেনই। কিছু বললে সমস্যা বাড়বে।’’ ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পার্কে দৌড়ানোর জন্য পেভার ব্লক বসিয়ে ট্র্যাক তৈরি করা হবে। সেখানে বয়স্ক ও শিশুদের কথা ভেবে বসার জায়গাও থাকবে।’’ যদিও রাজনৈতিক টানাপড়েনের কোনও তত্ত্ব মানতে নারাজ কাউন্সিলর।
ওই পার্কে শিশুদের খেলার সরঞ্জাম রাখার পাশাপাশি সকলের জন্য যোগাভ্যাসের ব্যবস্থাও থাকবে। যদি তা কবে বাস্তবায়িত হবে এ নিয়ে দ্বিধায় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এর আগে পার্ক লাগোয়া একটি ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের উস্কানিতে তাতে বাদ সেধেছিলেন কয়েক জন স্থানীয় মানুষ। সেই প্রস্তাব হিমঘরে চলে গিয়েছে। রাজনৈতিক টানাপড়েনে এই পার্কের ক্ষেত্রেও এমন কিছু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।