বাড়ি ফিরলেন ত্রিপুরার বাসিন্দা

হায়দরাবাদে ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, সেখানেও পৌঁছননি তাঁরা। তার পরেই ত্রিপুরার স্থানীয় থানা কিলায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫২
Share:

ফেরা: বাড়ির পথে অধীর। নিজস্ব চিত্র

ত্রিপুরার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। তার পরে কেটে গিয়েছিল প্রায় দু’মাস। না কর্মস্থল, না কোনও আত্মীয়ের বাড়ি— খোঁজ মেলেনি বছর পঞ্চান্নর মানুষটির। খোঁজ মিলল বাড়ি থেকে বহু দূরের ব্যারাকপুরের হাসপাতালে। তত দিনে স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে তাঁর। শেষ পর্যন্ত রবিবার ত্রিপুরায় নিজের বাড়িতে ফিরলেন অধীর জামাটিয়া।

Advertisement

ওই প্রৌঢ়ের দাদা ভক্তসাধন জামাটিয়া জানান, হায়দরাবাদের এক সংস্থায় কাজ করতেন অধীরবাবু। এলাকার আরও কয়েক জন সেখানে কাজ করেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর এলাকারই চার জনের সঙ্গে হায়দরাবাদ রওনা হন অধীর। তার পর থেকে খোঁজ মেলেনি তাঁদের। হায়দরাবাদে ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, সেখানেও পৌঁছননি তাঁরা। তার পরেই ত্রিপুরার স্থানীয় থানা কিলায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা।

ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২৯ সেপ্টেম্বর এক লরিচালক রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অধীরবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করান। তিনি জানান, ধূলাগড়ের রাস্তার ধারে অধীরবাবুকে ওই অবস্থায় দেখে তুলে আনেন তিনি। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেও স্মৃতি ফেরেনি তাঁর। তাঁর ভাষার কারণেও যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছিল। মাসখানেক চিকিৎসার পরে দিন কয়েক আগে তিনি ত্রিপুরা এবং কালীগঞ্জ কলোনির নাম বলেন।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই বিষয়টি জানান হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের। তাঁরা বিষয়টি জানান ত্রিপুরার হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্য বিশ্বজিৎ সাহাকে। তিনি সেখানকার রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের সাহায্যে তাঁর বাড়ি খুঁজে বার করেন।

অধীরবাবু ত্রিপুরার গোমতী জেলার কালীগঞ্জ কলোনির বাসিন্দা। ওই জেলার বাগমা কেন্দ্রের বিধায়ক রামপদ জামাটিয়া তাঁর মামা। বাড়ি ফেরানোর পুরো ব্যবস্থা তিনিই করেন। তাঁর বাড়ি খুঁজে দিয়েছে হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব। স্বভাবতই তাঁকে ফিরে পেয়ে খুশি অধীরবাবুর পরিজনেরা। যদিও তাঁর নিখোঁজ রহস্যের পর্দা ওঠেনি এখনও। কারণ, তাঁর সঙ্গে কর্মস্থলে বেরিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের খোঁজ এখনও মেলেনি।

পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা বিধায়ক রামপদবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি অধীরবাবুকে বাড়ি ফেরানোর দায়িত্ব দেন কলকাতার ত্রিপুরা ভবনের রেসিডেন্ট কমিশনারের উপরে। তিনি টিটাগড় থানা ও হাসপাতালেও চিঠি দেন।’’ তার পরেই শনিবার তাঁকে ত্রিপুরা ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার তাঁকে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।

মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রোটোকল অফিসার শঙ্কর দাস এবং অধীরবাবুর বাড়ির লোকেরা এ দিন তাঁকে আনতে বিমানবন্দরে ছিলেন। কী করে ধূলাগড়ে পৌঁছলেন তিনি? অধীরবাবু জানান, কেউ তাঁকে ভারী কিছু দিয়ে মাথার পিছনে মেরেছিল। তবে সেটা কোথায়, তা তাঁর মনে নেই। তার পরে কী ঘটেছিল, তা-ও মনে করতে পারছেন না তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন