Road repair

আবাসনে প্রতিমা আনতে চাঁদা তুলে রাস্তা সারালেন বাসিন্দারাই

রাস্তা নিয়ে পুরসভার উদাসীনতায় বহু দিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিধাননগর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের থাকদাঁড়ির বাসিন্দাদের অনেকে। এক সময়ে ওই সব এলাকা সিন্ডিকেট সাম্রাজ্য বলেই পরিচিত ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৪
Share:

তাই স্থানীয়েরাই চাঁদা তোলা থেকে রাস্তা সারানো— সব সারলেন এক দিনে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

তাপ্পি পড়ল ‘ছিটমহলের’ রাস্তায়।

Advertisement

এক দিকে ঝাঁ চকচকে নিউ টাউন। অন্য দিকে বিধাননগর পুরসভা। তা সত্ত্বেও ভাঙা রাস্তায় হোঁচট খান মানুষ। অভিযোগ, পুর এলাকার বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও বৃষ্টির জল ও ভারী গাড়ির চাপে ভেঙে যাওয়া রাস্তা দীর্ঘদিন সারাই হচ্ছিল না। অভিযোগ, একাধিক বার স্থানীয় পুর প্রতিনিধিকে জানিয়েও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত পুজোর আগে একটি আবাসনের বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে ডাকলেন ঠিকাদার। ভাড়া করলেন রোড রোলার। কেনা হল ঝামা পাথর-ঘেঁষ। তার পরে তাপ্পি পড়ল থাকদাঁড়ি রোডের একটি অংশে।

রাস্তা নিয়ে পুরসভার উদাসীনতায় বহু দিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিধাননগর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের থাকদাঁড়ির বাসিন্দাদের অনেকে। এক সময়ে ওই সব এলাকা সিন্ডিকেট সাম্রাজ্য বলেই পরিচিত ছিল। সেই সময়ে বেশ কিছু আবাসন থাকদাঁড়ি এলাকায় তৈরি হয়। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, শুরুর দিকে রাস্তা ঠিকঠাক ছিল। তবে অন্যান্য আবাসন তৈরির সময়ে ভারী গাড়ির চলাচলে রাস্তা ভাঙতে শুরু করে।

Advertisement

ওই এলাকায় পাঁচটি বিভিন্ন কলেবরের আবাসন রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বছর থেকেই রাস্তার হাল খারাপ হচ্ছিল। এই বছর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়। দুর্গাপুজোর সময়ে কী ভাবে খারাপ রাস্তা দিয়ে আবাসনে প্রতিমা নিয়ে আসা হবে, তা নিয়েই ক’দিন ধরে চিন্তায় ছিলেন একটি আবাসনের বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে ওই আবাসনের মহিলা-পুরুষ বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে পড়েন। চাঁদা তোলা হয়। এক ঠিকাদারকে রাজি করানো হয় খানিকটা রাস্তা সারাই করে দেওয়ার জন্য। পাশের পাড়ায় কাজ করতে আসা রোড রোলারের চালককেও বোঝানো হয়, যাতে রাস্তায় ফেলা পাথর সমান করে দেওয়া হয়।

এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমাদের পরিস্থিতি ছিটমহলের বাসিন্দাদের মতো। কেউ গুরুত্ব দেন না। দেড়-দুশো মিটার রাস্তার জন্য কবে থেকে কাউন্সিলর থেকে সর্বত্র দরবার করেছি। চিন্তা ছিল, ভাঙা রাস্তা দিয়ে কী ভাবে প্রতিমা আবাসনে নিয়ে আসা হবে। উপায় না দেখে আমরাই এক দিনে ঠিকাদার আর শ্রমিক জোগাড় করে রাস্তা সারাই করেছি।’’

উল্লেখ্য, বর্ষার কারণে পুজোর আগে রাস্তা সারাই না হলেও তাপ্পিটুকু দেওয়ার কথা অনেক দিন ধরেই বলে আসছিলেন বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ। তা হলে থাকদাঁড়ি রোডের ওই এলাকায় কেন সেই কাজ হল না? ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর বিনু মণ্ডলকে ফোন ও মেসেজ করলেও যোগাযোগ করা যায়নি। বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল রয়েছেন পূর্ত দফতরের দায়িত্বে। তাঁর দাবি, ‘‘পুজোর আগে সব রাস্তায় তাপ্পি দেওয়া হচ্ছে। কাজও প্রায় শেষ। ওই ওয়ার্ডের মানুষ কেন অভিযোগ করছেন, সেটা খোঁজ করে দেখব। এমনটা হওয়ার কথা নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন