Breath analyser Test

অতিথি কি মাতাল, পরীক্ষায় নারাজ বার

তিন সপ্তাহ ধরে লালবাজারের কর্তাদের সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের সমিতির আলোচনা সত্ত্বেও অতিথিদের ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার টেস্ট’ নিয়ে মীমাংসা হচ্ছে না।

Advertisement

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০২:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো রোখার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা এড়াতে চাইছে না তারা। কিন্তু পানশালা থেকে বেরিয়ে স্টিয়ারিং ধরার আগে চালকদের নিঃশ্বাস পরীক্ষার ভার ঘাড়েই নিতে চাইছে না কলকাতার বেশির ভাগ রেস্তোরাঁ ও পানশালার মালিকেরা।

Advertisement

আর তাই, তিন সপ্তাহ ধরে লালবাজারের কর্তাদের সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের সমিতির আলোচনা সত্ত্বেও অতিথিদের ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার টেস্ট’ নিয়ে মীমাংসা হচ্ছে না। পথ দুর্ঘটনায় মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর জেরেই এ বিষয়ে তৎপর পুলিশ। সোনিকার গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে যিনি ছিলেন, সেই বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারা) অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগও আনা হয়েছে। বিক্রম মদ্যপান করেছিলেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে লালবাজারের কর্তাদের অভিমত। কিন্তু মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর সমস্যার সমাধানসূত্র মেলেনি এখনও।

মত্ত চালকদের পাকড়াও করতে শহরের বিশেষ কয়েকটি এলাকায় নিয়মিত পুলিশি অভিযান বাড়ানোই নয়, পানশালা-রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকেও এই বিপদ সামলাতে নিজেদের শরিক করতে আগ্রহী পুলিশ। তখনই প্রস্তাব গিয়েছে, অতিথিরা পানশালা থেকে বেরোনোর সময়ে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ যন্ত্রে তাঁদের নিঃশ্বাস পরীক্ষা হোক। নিয়ম অনুযায়ী, ওই যন্ত্রের ‘রিডিং’ ৩০ ছাড়ালেই গোলমাল। অর্থাৎ, কারও ১০০ মিলিমিটার রক্তের ৩০ মিলিগ্রামের বেশি অ্যালকোহল থাকলেই তাঁর পক্ষে গাড়ি চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু অতিথিদের ধরে পানশালা থেকে বেরোনোর আগে পরীক্ষার ভার তাঁদের ঘাড়ে কেন বর্তাবে, সে প্রশ্ন তুলছেন মালিকেরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রতি ৬ সেকেন্ডে এক জনের প্রাণ কাড়ছে তামাক

পূর্ব ভারতের রেস্তোরাঁ ও হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা সুদেশ পোদ্দারের প্রশ্ন, ‘‘ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে অতিথিদের নিঃশ্বাস পরীক্ষার জন্য কি আইনি হক থাকবে আমাদের?’’ দু’সপ্তাহ আগে ডি সি (ট্র্যাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমারের সঙ্গে বৈঠকেও তাঁরা এ প্রশ্ন তুলেছেন। বুধবার ডি সি (ট্র্যাফিক) বলেন, ‘‘এখনই পানশালা মালিকদের আইনি অধিকার দেওয়া সম্ভব নয়। তা বলে ব্রেথ অ্যানালাইজারে কারও নিঃশ্বাস পরীক্ষা বা মত্ত অবস্থায় থাকা অতিথিকে গাড়ি চালানোর আগে পরামর্শ দেওয়ায় সমস্যা হবে না।’’ বার-মালিকদের প্রশ্ন, কিন্তু কেউ বাধা দিলে কী হবে? তা ছাড়া, মদ খেয়ে কে গাড়ি চালাবেন আর কে চালাবেন না তা বোঝাও কঠিন। অনেক ক্ষেত্রেই রেস্তোরাঁ-পানশালা থেকে দূরে গাড়ি রাখা হয়। কে স্টিয়ারিংয়ে বসছেন, তা কী ভাবে যাচাই হবে?

ডি সি অবশ্য বলছেন, কেউ বাধা দিলে তাঁকে কোনও জোর করতে হবে না। কিন্তু সিসিটিভি-র সামনেই কথাবার্তা হোক। পুলিশকে বিষয়টি দরকারে জানাবেন পানশালা মালিকেরা। বার-মালিকদের তরফে সুদেশ পোদ্দার বলেন, ‘‘অতিথিদের সচেতন করতে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে নিজেরাই পোস্টার তৈরি করছি। সেই পোস্টার ঠিক আছে কি না যাচাই করতে লালবাজারের কর্তাদের পাঠানোও হয়েছে।’’ কিন্তু কে মাতাল আর কে মাতাল নন, তা পরীক্ষার জন্য আলাদা পুলিশ রাখাই ভাল। আইনি অধিকার ছাড়া এই দায় বহনে নারাজ তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন