ভাঙাচোরা: রোজকার যাতায়াত এ পথেই। নিজস্ব চিত্র
নিকাশির পাইপ পাতার জন্য রাস্তার মাঝ বরাবর খোঁড়া হয়েছিল। সেই গর্ত চাপা দিতে ফেলা হয়েছে ইটের আস্তরণ। মাঝের এবড়োখেবড়ো এই অংশের দু’ধারের অপরিসর জায়গা দিয়েই এখন যাতায়াত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কসবার বি বি চ্যাটার্জি রোডের একাংশের ছবিটা জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে এমনই। এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার কাজ করছে কলকাতা পুরসভা। তিনটি পর্যায়ে হচ্ছে এই কাজ। ঢালিপাড়া মোড় থেকে কসবা পোস্ট অফিস পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তায় চলছে প্রথম পর্যায়ের কাজ। পোস্ট অফিস থেকে রেলব্রিজ পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায় এবং আর কে চ্যাটার্জি রোড ও বোসপুকুর রোডের কিছু অংশে তৃতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
কসবা রথতলা, হালতু, রুবি পার্ক, কায়স্থপাড়া, রামলাল বাজার-সহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের গড়িয়াহাট বা বালিগঞ্জ আসতে বি বি চ্যাটার্জি রোডই একমাত্র বড় রাস্তা। এই কাজের জন্যে বদলে দেওয়া হয়েছে চারটি বাস-রুট। যাতায়াতের একমাত্র সহায় অটো চলছে আশপাশের গলি দিয়ে। যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় দিনের ব্যস্ত সময়ে অটোর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে জেরবার হচ্ছেন বাসিন্দারা। বড় রাস্তা এড়িয়ে ঘুরে যাওয়ার জন্য বেশি ভাড়া হাঁকছেন রিকশাচালকেরাও। বি বি চ্যাটার্জি রোডের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘এই রাস্তা দিয়ে মানুষের যাতায়াত একেবারেই কমে যাওয়ায় আমার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কয়েক মাস ধরেই।’’ এখন কাজ চলছে এই রাস্তার জোড়ামন্দির থেকে পোস্ট অফিস পর্যন্ত অংশে। এই অংশের বাসিন্দারা এবড়োখেবড়ো রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না দুর্ঘটনার আশঙ্কাও।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘নিকাশি পরিকাঠামোর উন্নতি করতে কাজ হচ্ছে, সেটা ভাল। কিন্তু এই রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হলে ভাল হতো।’’ প্রায় পাঁচ মাস ধরে মাত্র দেড় কিলোমিটার এলাকার কাজ শেষ করা গেল না কেন, তা জানতে চাইলে স্থানীয় ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাজ দ্রুতই হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এক মাস কাজ বন্ধ ছিল। প্রথম পর্যায়ের কাজ জুনের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে হয়ে যাবে। বাকি পর্যায়ের কাজ বড় রাস্তায় না হওয়ায় অসুবিধা তুলনায় কম হবে। কাজ শেষ হলে এলাকায় জল জমার সমস্যা কমবে।’’
বর্ষা এসে গেলে বাকি কাজ শেষ করতে অসুবিধা হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ ভৌমিক বলেন, ‘‘বর্ষা এসে যাওয়ার বিষয়টি মাথায় আছে। অনেক রকম ছাড়পত্র পাওয়ার পরে তবেই কাজ শুরু করা যায়। তা ছাড়া, মাটির তলায় কাজ করতে সাবধানে এগোতে হয়। ওই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা হচ্ছে। তাই কিছু সময় লাগছে।’’