ফুটপাথে ধস নেমে রাক্ষুসে গর্ত চেতলায়

ছোট আকারে গর্তটা দেখা গিয়েছিল শুক্রবারেই। খবর দেওয়া সত্ত্বেও আমল দেয়নি পুরসভা। শনিবারের দিনভর বৃষ্টিতে সেই ছোট্ট গর্ত পরিণত হল ১০ ফুট লম্বা বড় গহ্বরে। চেতলার মহেশ দত্ত লেনের ফুটপাথে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মেরামতি শুরু করেন পুরকর্মীরা। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সেই গহ্বর বুজিয়ে দেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২০
Share:

চেতলার মহেশ দত্ত লেনের সেই গর্ত। নিজস্ব চিত্র

ছোট আকারে গর্তটা দেখা গিয়েছিল শুক্রবারেই। খবর দেওয়া সত্ত্বেও আমল দেয়নি পুরসভা। শনিবারের দিনভর বৃষ্টিতে সেই ছোট্ট গর্ত পরিণত হল ১০ ফুট লম্বা বড় গহ্বরে। চেতলার মহেশ দত্ত লেনের ফুটপাথে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মেরামতি শুরু করেন পুরকর্মীরা। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সেই গহ্বর বুজিয়ে দেন তাঁরা।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই ফুটপাথে একটি গভীর নলকূপের পাইপ আছে। সেই পাইপের নীচের কিছুটা অংশ প্রথমে বসে গিয়েছিল। তার পরে বৃষ্টিতে ধস নেমে তা আরও বড় হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গভীর নলকূপটি বসানো হয় বছর দেড়েক আগে। তখন এই ফুটপাথেই জলের পাইপ বসানো হয়েছিল। শুক্রবার সকালে সেই পাইপের গোড়াতেই একটি ছোট গর্ত দেখা যায়। বারবার খবর দেওয়া হয় এলাকার কাউন্সিলর তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। কিন্তু তিনি আসেননি। পাঠানো হয়নি পুরসভার কর্মীদেরও। এলাকার এক বাসিন্দা জানান, শনিবার সকালে বারবার ফোন করার পরে পুরসভার কয়েক জন কর্মী আসেন। দুর্ঘটনা এড়াতে গর্তটি ঘিরে দিয়ে যান। কিন্তু তা বুজিয়ে দেওয়ার কাজ ওই দিন শুরু হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

শনিবার রাতটা ও-ভাবেই কেটে যায়। এক বাসিন্দা বলেন, “রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, বাড়ির সামনের ফুটপাথের বেশ কিছুটা অংশ বেবাক হাওয়া। বেরিয়ে দেখি, মাটি এবং ইটের কাঠামো-সহ ফুটপাথের ওই অংশ নেমে গিয়েছে অনেক নীচে। ফের খবর দেওয়া হয় পুরসভায়। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পুরকর্মীরা গর্ত বোজাতে শুরু করেন।”

Advertisement

পুরসভার এক কর্মী জানান, জল ঢুকে মাটি বসে যাওয়ার ফলেই ধস নেমেছে। ১০ ফুট লম্বা, চওড়ায় পাঁচ ফুট ওই গহ্বরের গভীরতা পাঁচ ফুট। বৃষ্টিতে গর্তের ভিতরে জল জমে যাওয়ায় প্রথমে গভীরতা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল পুরকর্মীদের। পুরসভা সূত্রের খবর, এক লরি টুকরো ইট এবং সাদা বালি দিয়ে সেই গর্ত ভরাট করা হয়। মেয়র-পারিষদ অতীন ঘোষ (ফুটপাথ) জানান, মহানগরীর ফুটপাথে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের কাজ হয়ে থাকে। কলকাতার মাটি নরম। তাই খোঁড়াখুঁড়ির পরে মেরামত করতে ন্যূনতম কয়েক দিন সময় দেওয়া উচিত। কিন্তু বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সব ক্ষেত্রে তা দেওয়া সম্ভব হয় না। দ্রুত কাজ করতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। তিনি বলেন, “বছরখানেক আগে চেতলার ওই ফুটপাথে পাইপ বসানোর কাজ হয়। তখন তাড়াহুড়ো করে ফুটপাথ মেরামত করা হয়। বৃষ্টির জল ঢুকে মাটি বসে যাওয়াতেই বিপত্তি।’’

ইদানীং মহানগরের বিভিন্ন প্রান্তে ধস নামছে, গর্ত দেখা যাচ্ছে। কয়েক দিন আগে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে নেতাজি-মূর্তির পিছনে রাস্তায় একটি গর্ত দেখতে পান ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা। ওই রাস্তার তলা দিয়ে যাওয়া নিকাশি নালার পাশে থাকা ইটের কাঠামো ভেঙে যাওয়ায় ওই গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল বলে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান। তার আগে ঢাকুরিয়া সেতুর কাছে ধস নেমে তিন ফুট গভীর হয়ে রাস্তা বসে গিয়েছিল। পরে খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ ফুট লম্বা এবং চার ফুট চওড়া অংশ জুড়ে রাস্তার নীচে কোনও মাটি নেই! আশপাশের গর্ত থেকে ইঁদুর ঢুকে রাস্তার নীচের মাটি কেটে সরিয়ে দিয়েছে বলে অনেকের ধারণা। তবে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ জানান, ওই এলাকার মাটিতে বালির ভাগ বেশি। পাশেই পাম্পিং স্টেশন। সেখানকার কম্পনের ফলেও ধস নামতে পারে। গত মাসে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসে রুবি মোড়ের কাছেও রাস্তায় ধস নামে। পুরমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মেট্রো রেলের কাজের জন্য ওখানে বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী বেড়া দেওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ওই এলাকায় জল জমে যায়। সেই জল চলে যাচ্ছে রাস্তার নীচে। তার জেরেই রাস্তায় ফাটল ধরছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন