Kalighat Skywalk

স্কাইওয়াক তৈরির জের, খন্দপথে কালীঘাট পৌঁছতে ভোগান্তি

স্কাইওয়াক তৈরির কারণে কালীঘাট মন্দিরের পরিচিত রাস্তা একেবারে বদলে গিয়েছে। রাস্তার চারপাশে এখন অর্ধনির্মিত সিমেন্টের স্তম্ভ। ৪০ ফুট রাস্তার পরিসর এখন মেরেকেটে দাঁড়িয়েছে ১০ ফুটে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০৪
Share:

খানাখন্দময় পথ পেরিয়েই কালীঘাট মন্দিরের দিকে দর্শনার্থীরা। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

স্কাইওয়াক তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। ফলে খন্দপথ পেরিয়ে পুজো দিতে কোনও রকমে কালীঘাট মন্দিরে পৌঁছচ্ছেন দর্শনার্থীরা। বেহাল এই রাস্তার কারণে এ বারের কালীপুজোয় যেন কিছুটা তাল কেটেছে। পুজোর দিনে কালীঘাট মন্দিরে দর্শনার্থীদের ঢেউ সে ভাবে চোখে পড়েনি। কারণ, মন্দির পর্যন্ত পৌঁছতে আশপাশের গলিপথ খুঁজে বার করতেই দিশাহারা অবস্থা হয়েছে দর্শনার্থীদের।

Advertisement

রবিবার অমাবস্যা তিথির পরে কালীঘাটে মহালক্ষ্মী পুজো শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে অমাবস্যা তিথির যোগ শুরু বলে মন্দির সূত্রের খবর। সোমবার দুপুর পর্যন্ত অমাবস্যা তিথি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেবায়ত কাউন্সিলের একাংশ। সেবায়েতদের একাংশের কথায়, ‘‘এক দিনের বদলে দু’দিনই কালীপুজোর তিথি থাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় একসঙ্গে তেমন হবে না। ফলে খারাপ রাস্তার কারণে ভিড়ে দর্শনার্থীদের বেশি হয়রান হতে হবে না।’’

স্কাইওয়াক তৈরির কারণে কালীঘাট মন্দিরের পরিচিত রাস্তা একেবারে বদলে গিয়েছে। রাস্তার চারপাশে এখন অর্ধনির্মিত সিমেন্টের স্তম্ভ। ৪০ ফুট রাস্তার পরিসর এখন মেরেকেটে দাঁড়িয়েছে ১০ ফুটে। তার পরেও রাস্তার দু’পাশে রয়েছে বড় বড় গর্ত, ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ইটের টুকরো। বহু অংশে এখনও কাঁচা মাটি রয়ে গিয়েছে রয়েছে। তবে সব রকম বাধাবিঘ্ন এড়িয়েই এ দিন মন্দিরে পৌঁছেছেন দর্শনার্থীরা। রাস্তার অসুবিধা সত্ত্বেও দু’দিনের অমাবস্যা তিথির যোগ থাকায় কিছুটা হলেও দর্শনার্থী সমাগমের আশায় রয়েছেন সেবায়েত ও ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

করোনা অতিমারীর পর থেকে কালীঘাটে কালীপুজো ও পয়লা বৈশাখে দর্শনার্থীদের ঢেউ আগের মতো আর চোখে পড়ে না বলেই সেবায়েতেরা জানাচ্ছেন। তাই অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করাই এখন সেবায়েত, পান্ডা, ফুল ও মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ফাঁকা দোকানের আড্ডার মূল বিষয়। তবে গত কয়েক বছরের মতো এ বারও কালীপুজোয় ভিড়ের আশায় রয়েছেন তাঁরা। সকাল থেকেই জবা ফুলের মালার দাম চড়ছে। সকালে যে জবার মালার দাম ছিল ৪০ টাকা, তা-ই দুপুরে বেড়ে দাঁড়ায় ৮০-১০০ টাকায়। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ মিষ্টি তৈরি করে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এ বার পুজো কার্যত দু’দিনের। সেই কারণে প্রথম এবং দ্বিতীয় দিন অল্প অল্প করে প্রসাদ তৈরি করা হয়েছে। গত দু’বছর বড় লোকসানের মুখে পড়েছিলাম। এ বছর তাই অবস্থা দেখে ব্যবস্থার নীতি নিয়ে চলছি আমরা।’’

তবে ফুল ব্যবসায়ীদের ঝুড়ি রবিবার সকাল থেকেই ভরে রয়েছে জবার কুঁড়িতে। এক ফুলব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘জবার মালার ক্ষেত্রে একটা সুবিধা রয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই কুঁড়ি দিয়ে মালা তৈরি করেছি। অল্প অল্প জল ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। ধীরে ধীরে কুঁড়ি ফুটে ফুল হবে। সে ক্ষেত্রে মালা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম। দু’দিনের পুজোর জোগান দেওয়ার জন্য এক বারেই ফুলের কুঁড়ি বেশি পরিমাণে নিয়ে আসা হয়েছে। যদি সব মালা শেষ হয়েও যায়, তা হলে ভোরে ফের কুঁড়ি এনে মালা তৈরি করব।’’ গত দু’বছরে কালীঘাটে তেমন দর্শনার্থী না হওয়ায় কেনা দামের থেকেও কম দামে মালা বিক্রি করতে হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। তাই এ বারে কুঁড়ি দিয়ে মালা গেঁথে লোকসানের পরিমাণ কমাতে চাইছেন তাঁরা। তবে এ দিন বিকেলের পর থেকে নানা অলিগলি দিয়ে দর্শনার্থীদের মন্দিরে পৌঁছে পুজো দিতে দেখা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন