জোড়াতালি: এ ভাবেই যাতায়াত তারাতলা রোডে। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তা তো নয়, যেন পুকুর। রাস্তার মাঝ বরাবর বিশাল বিশাল গর্ত। আশপাশে আরও ছোট-মাঝারি গর্ত। সেই গর্তের উপরে ভাঙা ইটের টুকরো ফেলে তাপ্পি মারা হয়েছে। ফলে পুরো পথটাই খানাখন্দময়। নিত্য লেগে রয়েছে যানজট। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবুও রাস্তা সংস্কারে কোনওরকম মাথাব্যথা নেই প্রশাসনের। ছবিটা তারাতলা রোড ও সন্তোষপুর নিউ রোডের। অবস্থা এতই শোচনীয় যে রাস্তা মেরামতির দাবিতে বুধবার সকালে প্রায় এক ঘণ্টা সন্তোষপুর নিউ রোড অবরোধ করলেন একটি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। এর জেরে তীব্র যানজট হয় ওই রাস্তা এবং লাগোয়া তারাতলা রোডে।
তারাতলার নেচার পার্কের কাছে গার্ডেনরিচ জল প্রকল্পের সামনে বিড়লা ভারতী স্কুল। অভিভাবকদের অভিযোগ, রাস্তার শোচনীয় অবস্থায় বারবার দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে পড়ুয়ারা। এ দিন স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা গেল, বড় বড় গর্তে জমে রয়েছে জল। অসাবধানতায় গর্তে গাড়ির চাকা পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষী পঞ্চানন পারিয়ার কথায়, ‘‘একছাত্রী বাবার সঙ্গে মোটরবাইকে আসছিল মঙ্গলবার। গর্তে চাকা পড়ে উল্টে যায় বাইক। জখম হয় ছাত্রী।’’
একই চিত্র তারাতলার ব্রেস ব্রিজ স্টেশনের সামনের রাস্তারও। মাঝখানে বিরাট গর্ত। দু’পাশে গাড়ির সারি। এ দিন সেখানে দেখা গেল, একটি বাসের পিছনের চাকা ঢুকে গিয়েছে গর্তে। অনেক কষ্টে চালক গাড়িটি গর্ত থেকে তুলতে পারলেন। স্থানীয় বাসিন্দা পুলক মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘সারা বছরই তারাতলা রোডের এমন অবস্থা।’’ পুলিশ জানায়, মাস তিনেক আগে ব্রেস ব্রিজ স্টেশনের কাছে গর্তে মোটরবাইক উল্টে মারা যান এক তরুণী।
এ দিন তারাতলার ওই স্কুলের কাছে দেখা গেল, রাস্তার এক পাশে মাটি কেটে নিকাশির পাইপ বসানো হলেও ওই অংশ আর সারানো হয়নি। অধ্যক্ষা অপালা দত্ত বলেন, ‘‘রাস্তার সমস্যা দীর্ঘ দিনের। তা মেটাতে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেও দেখা করেছিলাম। কাজ হচ্ছে, কিন্তু তা জোড়াতালি দিয়ে।’’ ওই রাস্তা দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সন্তোষপুর নিউ রোডে নিকাশি সংস্কারের কাজ চলছে। তার জন্য সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। তবে শীঘ্রই পুরো রাস্তা মেরামতি শুরু হবে।’’ অন্য দিকে তারাতলা রোড সংস্কারের ব্যাপারে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অবিলম্বে ওই রাস্তাতেও কাজ শুরু হবে।’’