—প্রতীকী চিত্র।
গত দু’দিনে তিন বার। হাসপাতালে রোগীমৃত্যু এবং তার জেরে রোগীর আত্মীয়দের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল শহরে।
বিকেলে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে এলেও তেরো বছরের কিশোরীকে ইঞ্জেকশন এবং ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। বাড়ি ফিরেই অবস্থার অবনতি হলে ফের তাকে আনা হয় হাসপাতালে। কিন্তু জরুরি বিভাগ থেকে মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সময়েই ওই কিশোরীকে মৃত্যু হয়।
রবিবার রাতে এই ঘটনার পরেই কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে মৃতার আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা ভিড় জমান। তাঁরা চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার খবর পেয়ে পৌঁছন কামারহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তুষার চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসার গাফিলতিতে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু সে জন্য হাসপাতালে ভাঙচুর বা অশান্তি কাম্য নয়।’’ রাতেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মৃতার পরিজনেরা। যদিও সোমবার রাত পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। হাসপাতাল সুপার গৌতম জোয়ারদারও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পুলিশ জানায়, আড়িয়াদহের বাসিন্দা সোনালি সাউ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। রবিবার বিকেলে খেলাধূলা করে আসার পরেই ধুম জ্বর আসে সোনালির। অভিযোগ, তাকে সাগর দত্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ভর্তি করার প্রয়োজন নেই জানিয়ে একটি ইঞ্জেকশন ও কিছু ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সোনালির প্রতিবেশীরা জানান, হাসপাতাল থেকে ফেরার কিছু পরেই সোনালির জ্বর বাড়তে থাকে। খিঁচুনি শুরু হয়ে দাঁতে দাঁত লেগে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যায় ফের তাকে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে সোনালিকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করতে লিখে দেন। মৃতার প্রতিবেশী পল্টু দে জানান, মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে বলেন উপরে নিয়ে আসার সময়েই মৃত্যু হয়েছে সোনালির। মৃতার মা মমতা সাউ বলেন, ‘‘প্রথমে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখনই ভর্তি করে নিলে মেয়েটা হয়তো এমন ভাবে মারা যেত না।’’