ছবি: সংগৃহীত
এক রাতেই বদলে গিয়েছে সল্টলেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বাইরে তিন নম্বর সেক্টরের চেহারাটা। রাস্তা এবং সার্ভিস রোড দখল করে থাকা ঝুপড়ি দোকান সরানো হয়েছে। ফুটপাথে বসেছে পেভার ব্লক। করুণাময়ী পর্যন্ত বুলেভার্ড বাহারি গাছ ও বিভিন্ন ভাস্কর্য দিয়ে সেজে উঠেছে। সৌজন্যে ১৭ অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ।
প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, এ ভাবেই সৌন্দর্যায়ন হোক গোটা সল্টলেকের। তাতেই ফিরবে হারানো গরিমা। বাসিন্দাদের এই দাবি পূরণ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাতে সৌন্দর্যায়নের কাজ দেখতে গিয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও একই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে পুরসভাকে রাজ্য সরকার আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে।
শনিবার রাতভর সৌন্দর্যায়ন চলেছে। অনেক রাত পর্যন্ত সেই কাজ তদারকি করতে হাজির ছিলেন বিধাননগর পুর প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। রবিবার সকালে তিন নম্বর সেক্টরের বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এক রাতে এ ভাবে ভোল বদলে যাবে তা ভাবা যায় না। বেলেঘাটা-বাইপাস মোড় থেকে সল্টলেকের প্রবেশপথ এবং সার্ভিস রোড দখল করে থাকা ঝুপড়ি দোকান সরানো হয়েছে। ফুটপাথে বসেছে পেভার ব্লক। করুণাময়ী পর্যন্ত বুলেভার্ডে বাহারি গাছ ও ভাস্কর্য বসানো হয়েছে। বাতিস্তম্ভে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে সুদৃশ্য বাহারি গাছ। আইল্যান্ডগুলি মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এলইডি আলো দিয়ে। সল্টলেক থেকে ইএম বাইপাসে যাওয়ার পথে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে বিধাননগর লেখা লোগোটি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু বসু বলেন, ‘‘বিদেশে এমন আলো দিয়ে শহরের নাম লেখার নজির রয়েছে। এখানেও এমন হতে দেখে ভালো লাগছে। গোটা সল্টলেক এ ভাবে সেজে উঠলে আরও ভাল লাগবে।’’
শুধু সল্টলেকই নয়, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিধাননগর পুর এলাকায় প্রবেশের পথে হলদিরামের কাছে বিভিন্ন মডেল, ঘুরতে থাকা গোলকও নতুন আকর্ষণ তৈরি করছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, এই সৌন্দর্যায়ন যেন সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। পুরসভার বক্তব্য, প্রশাসন তার কাজ করবে। কিন্তু সৌন্দর্যায়ন রক্ষা করার ভার বাসিন্দাদেরও। পুরকর্তাদের আবেদন, বাসিন্দারা যেন কর্তৃপক্ষকে এ কাজে সহযোগিতা করেন। সৌন্দর্যায়ন করতে গিয়ে রাস্তা-ফুটপাথ এবং সরকারি জমি থেকে দখলদার সরিয়েছে পুরসভা। তা নিয়ে বিতর্ক যেমন হয়েছে, শুরু হয়েছে বিক্ষোভ আন্দোলন। যদিও এ ক্ষেত্রে বাসিন্দারা দাঁড়িয়েছেন পুর প্রশাসনের পাশেই।
বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘পুরমন্ত্রী গোটা সল্টলেক সাজানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিশ্বকাপ শেষ হলে সে কাজের আলোচনা শুরু হবে।’’ সূত্রের খবর, বিভিন্ন প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ মোড় সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে জানানোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যও তুলে ধরা হবে। দখলদার সরানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের কাছে আবেদন— শহর আপনাদের। দখল হলে আপনারা প্রতিবাদ জানান। প্রশাসনকে জানান। প্রশাসন পদক্ষেপ করবে।’’