Sanitary Napkins

এ বার ন্যাপকিন মিলবে বাঁশদ্রোণীর পেট্রল পাম্পে

সম্প্রতি নিজের এলাকার হিন্দুস্থান পেট্রলিয়ামের ওই পাম্পে গিয়ে এই প্রস্তাব দিতেই তা লুফে নেনসেটির মালকিন ও ডিলার শালিনী সেন। মাত্র এক দিনের মধ্যেই এই প্রস্তাবে সায় দেন এইচপি-র কর্তারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৩ ০৮:০২
Share:

বাঁশদ্রোণীর একটি পেট্রল পাম্পের শৌচাগারে ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন বসানো হল বুধবার। প্রতীকী চিত্র।

কলকাতা থেকে দূরপাল্লার বাসে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার সময়ে সহযাত্রীদের প্রয়োজনে কয়েক বার হাইওয়ের পাশের পেট্রল পাম্পে বাস দাঁড় করাতে হয়েছিল। তখনই ভাবনাটা মাথায় এসেছিল ‘কলকাতার প্যাডম্যান’ শোভন মুখোপাধ্যায়ের। বুঝেছিলেন, দূরপাল্লার ওই মহিলা যাত্রীদের আচমকা ঋতুস্রাব শুরু হলে স্যানিটারি ন্যাপকিনের জোগান দিয়ে মুশকিল আসানের ভূমিকা নিতে পারে পেট্রল পাম্পগুলির শৌচাগার।

Advertisement

সেই ভাবনা থেকেই বাঁশদ্রোণীর একটি পেট্রল পাম্পের শৌচাগারে ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন বসানো হল বুধবার। রাজ্যেএই প্রথম কোনও পেট্রল পাম্পের মহিলা শৌচাগারে থাকছে ওই ভেন্ডিং মেশিন। মাত্র পাঁচ টাকা দিয়ে ওই ন্যাপকিন ব্যবহার করতেপারবেন পাম্পের শৌচাগারে আসা মহিলারা।

মাল্টিপ্লেক্সে গিয়ে হঠাৎ পিরিয়ড শুরু হওয়ার অসহায়তা নিয়েসম্প্রতি একটি টুইট ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে অনেকেই জানান, পাঁচতারা রিসর্ট থেকে কর্পোরেট অফিস, বিমানবন্দর, এমনকি বেসরকারি হাসপাতালেও আচমকা প্রয়োজনে ন্যাপকিন না পাওয়ার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। দূরপাল্লার মহিলা যাত্রীরাও যে এই একই বিপদে পড়েন বা পড়তে পারেন, তা বাসে উঠে আঁচ করতে পেরেছিলেন বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা শোভন। কিন্তু, তখন শহরের তিন-চারটি পেট্রল পাম্পে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে গেলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

Advertisement

সম্প্রতি নিজের এলাকার হিন্দুস্থান পেট্রলিয়ামের ওই পাম্পে গিয়ে এই প্রস্তাব দিতেই তা লুফে নেনসেটির মালকিন ও ডিলার শালিনী সেন। মাত্র এক দিনের মধ্যেই এই প্রস্তাবে সায় দেন এইচপি-র কর্তারাও। শোভনের কথায়, ‘‘কলকাতার সমস্ত গণশৌচাগারে ভেন্ডিং মেশিনবসাতে পারলে পেট্রল পাম্পের কথা হয়তো মাথাতেই আসত না। কিন্তু অনেক গণশৌচাগারেই এখনও সেটা হয়নি। তাই মনে হল, মাঝরাতে কারও রাস্তায় আচমকা ঋতুস্রাব শুরু হলে এই সব পেট্রল পাম্পন্যাপকিনের জোগান দিতে পারে। রাতে ওষুধের দোকান খোলা না থাকলেও সমস্যা হবে না অসহায় মহিলাদের।’’

শালিনী জানাচ্ছেন, রাতের দিকে অনেকেই পাম্পের শৌচাগার ব্যবহার করেন। পুজোর সময়েও পাম্পের শৌচাগার ব্যবহার করতে আসা মেয়েদের সংখ্যা বেশি থাকে। ‘‘তাই আপৎকালীন সময়ে এই ভেন্ডিং মেশিনে তাঁদের সুবিধা হবে। ঋতুস্রাব নিয়ে সমাজের গোঁড়ামি ভাবটাও এ বার ভাঙার সময় এসেছে।’’— বলছেন শালিনী।

পরিসংখ্যান বলছে, সারা রাজ্যে পেট্রল পাম্পের সংখ্যা ৩১০০-৩৫০০। এর মধ্যে বাঁশদ্রোণীর ওই পেট্রল সরবরাহকারী সংস্থার পাম্পের সংখ্যা কম-বেশি ছ’শো। হিন্দুস্থান পেট্রলিয়ামের আঞ্চলিক প্রধান (রিজিয়োনাল হেড) সুশীল প্রধান বলছেন, ‘‘বাঁশদ্রোণী এলাকায় স্কুল, কলেজ বা বাজারে স্কুটার অথবা গাড়ি চালিয়ে যাওয়া অনেক মহিলাই পাম্পে আসেন। সেখানে তাই মহিলাদের আনাগোনা বাড়ছে। তাঁদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ। এই প্রচেষ্টায় সাড়া মিললে আমাদের বাকি পাম্পেও এ রকম ভেন্ডিং মেশিন বসানোর কথা ভাবা হবে।’’

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যনির্বাহী সভাপতি প্রসেনজিৎ সেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাধু উদ্যোগ। পাম্পে ফার্স্ট এড বক্সের মতো ন্যাপকিন রাখারও প্রয়োজন আছে। শীঘ্র রাজ্যের পেট্রল পাম্পগুলিতে এই মেশিন রাখা যায় কি না, তা দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন