সঞ্জয়-কাণ্ডে জুনেই কি চার্জশিট

হাসপাতালের কোনও উচ্চপদস্থ কর্মী ঘটনার পরে পদত্যাগ করলেও তিনি দায় এড়াতে পারেন না বলে সঞ্জয়-কাণ্ডের রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী অফিসার।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০১:১৬
Share:

হাসপাতালের কোনও উচ্চপদস্থ কর্মী ঘটনার পরে পদত্যাগ করলেও তিনি দায় এড়াতে পারেন না বলে সঞ্জয়-কাণ্ডের রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী অফিসার।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে দাবি, ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় মূল সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসক-সহ প্রায় ২০ জন। চিকিৎসক, আধিকারিক, চিকিৎসাকর্মী, যাঁরা সঞ্জয় রায়ের চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, তেমন ৭০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ওই ২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাঁচ চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও পুলিশ তাকিয়ে রয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রিপোর্টের দিকে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসকদের ভূমিকা নির্ধারণ করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।’’

লালবাজারের সূত্রটি জানাচ্ছেন, ওই হাসপাতালের কর্তাদের কেউ কেউ ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু পদত্যাগ করলেও দায় এড়ানো যাবে না বলে তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে। সঞ্জয়-কাণ্ডের পরে অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট রূপালি বসু পদত্যাগ করেন। তার পরেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

অ্যাপোলোতে সাত দিন ভর্তি থাকার পরে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি সঞ্জয়কে। ২৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতি এবং জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরব হন।

পুলিশের পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতর দু’টি কমিটি গড়ে তদন্তে নামে। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত শেষ হয়েছে মাস দেড়েক আগে। পুলিশের তদন্তও শেষ, কিন্তু এখনও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সঞ্জয়ের বন্ধুরা অনেকেই হতাশ। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত রিপোর্টের কী হল, তা নিয়ে স্বাস্থ্য ভবন মুখে কুলুপ এঁটেছে। তবে লালবাজার দাবি করেছে, অভিযুক্ত তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির যে অভিযোগ উঠেছে, মেডিক্যাল কাউন্সিল ও ফরেন্সিক স্টেট ল্যাবরেটরির কাছ থেকে তার রিপোর্ট আসেনি। তা পেলেই সঞ্জয়-কাণ্ড নিয়ে চার্জশিট দেবে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, সঞ্জয়ের চিকিৎসার বিলের ১০ শতাংশই জাল। অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অভিযোগ, চিকিৎসক ও হাসপাতাল প্রশাসনের একাংশ মিলে ‘তোলাবাজির চক্র’ হিসেবেও কাজ করেছেন। অনিয়মের হাতিয়ার হিসেবে উঠে এসেছে জমির দলিল, গয়না ও ফিক্সড ডিপোজিটের কথা।

মৃতের বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে খতিয়ে দেখা হয়েছে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ। হাসপাতালের ছ’টি ভিডিও রেকর্ডার বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা তা খতিয়েও দেখেছেন। এতে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। কোন চিকিৎসক এবং নার্স সঞ্জয়ের ঘরে কখন কখন ঢুকেছেন, তা পরিষ্কার হয়েছে ওই ফুটেজ থেকে। তাতেও বিলের সঙ্গে অসঙ্গতি স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন