৬০ ফুট উচ্চতার রথ বানিয়ে এ বার ওড়িশাকে টক্কর দিতে চলেছে বাংলা।
রসগোল্লার পর এ বার রথ। ওড়িশাকে ফের টেক্কা দিতে চলেছে বাংলা।
পুরীর জগৎখ্যাত জগন্নাথের রথ ‘নন্দীঘোষ’-এর উচ্চতা ৪৫ ফুট। এ বার কলকাতায় এমনই এক রথ নির্মাণ করা হচ্ছে। তার উচ্চতা হবে ৬০ ফুট! অর্থাৎ প্রায় ছ’তলা বাড়ির সমান। শুধু তাই নয়, এ রথ তৈরি হবে রুপো দিয়ে! তিন মাস বাদেই ওই রথ দেখা যাবে উত্তর কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারে।
এমনিতেই উত্তর কলকাতার দুর্গাপুজো মানেই বনেদিয়ানায় ঠাসা। এ বার সেই বনেদিয়ানায় নয়া চমক আনছে ওই পুজো কমিটি। ৮৩তম বছরে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার অর্থাৎ লেবুতলা পার্কে ওই রথ তৈরি করতে খরচ হবে ৪০ কোটি টাকা। পুজো কমিটির সম্পাদক সজল ঘোষ বলেন, “গত বছর আমরা দুর্গা প্রতিমাকে সোনার শাড়ি পরিয়েছিলাম। এ বার সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের সহযোগিতায় আমরা ৪০ কোটির রুপোর রথ উপহার দেব দর্শকদের।”
আরও পড়ুন: তিন হাজার বিপজ্জনক বাড়ি, নোটিস মাত্র ৫০ জনকে, মেরামতিতে রাজি নন কেউই!
কিন্তু কী ভাবে তৈরি করা হবে এই বিপুলাকার রথ?
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে ইস্পাত দিয়ে রথের কাঠামো বানানো হবে। তার পর বিশাল ওই কাঠামোর গায়ে চাপানো হবে রুপোর পাত দিয়ে তৈরি নকশাদার চাদর। ওই নকশা তৈরি করতে প্রায় ১০ টন রুপো লাগবে। নকশা তৈরির কর্মকাণ্ড তাদের কলকাতার ওয়ার্কশপেই হবে বলে জানিয়েছে ‘সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস’। সেখানকার কারিগররাই তৈরি করবেন রুপোর পাতের নকশাদার চাদর। যা চাপানো হবে ওই কাঠামোর গায়ে। ওই সংস্থার তরফে অভিজিৎ ধর বলেন, “শিল্পীদের হাতের কাজ এত মানুষের সামনে তুলে ধরা যাবে, এটাতেই আমাদের আনন্দ। নকশার কাজ চলছে। শেষ হয়ে গেলেই সেগুলি ইস্পাতের তৈরি রথের গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হবে। পুজোর পর আবার তা খুলেও নেওয়া হবে।”
দেখুন ভিডিও:
গত ৩০ বছর ধরে লেবুতলা পার্কে পুজোর মণ্ডপ তৈরি করছে মর্ডান ডেকরেটর্স। এ বারও তারাই রথের কাঠামো তৈরি করছে। রথ তৈরির সামগ্রিক পরিকল্পনার বাস্তব রূপ দিচ্ছেন শিল্পী দীপক ঘোষ। তিনি বলেন, “রথের চমক তো থাকছেই। তা ছাড়া, রথের কাঠামোর ঠিক পিছনে একটি পাথরের পাহাড়ও তৈরি করা হবে। সেখানে মহাভারতের যুদ্ধ শুরুর আগের রণসজ্জার চিত্র তুলে ধরা হবে। ওই পাহাড়ের ভিতরেই দেবীর মূর্তি বসানো হবে।”
৪০ কোটির রুপোর রথ থাকবে পার্কে আর নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো হবে না! কলকাতা পুলিশের তরফে কড়া নজরদারি থাকবে। সাদা পোশাকে থাকবেন গোয়েন্দারা। এ ছাড়া গোটা মাঠ জুড়ে নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করবেন উদ্যোক্তারা। রথের চার পাশে নজর রাখবেন শ’চারেক স্বেচ্ছাসেবক। মণ্ডপের ভিতরে বাইরে থাকবে ৩০টিরও বেশি সিসিক্যামেরা।