—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করার জন্য বেসরকারি বাস নেওয়ার পর্ব আগেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বেসরকারি বাস না পাওয়ায় এ বার স্কুলবাসের দিকেও হাত বাড়াচ্ছে প্রশাসন।
ভোটের কাজে ব্যবহারের জন্য জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর এবং আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের মাধ্যমে বেসরকারি বাস নেওয়ার পরে পুলিশের মাধ্যমেও বাস নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে। নির্বাচনের পরবর্তী দফাগুলিতে লোকসভা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। তবে শুধু নিরাপত্তা বাহিনী এবং ভোটকর্মীদের যাতায়াতের জন্যই নয়, বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের যাতায়াতের জন্যও প্রয়োজন হচ্ছে গাড়ির। সেই জন্য অনেক ক্ষেত্রেই স্কুলগাড়ি এবং বাণিজ্যিক গাড়ি পুলিশ রাস্তা থেকে তুলে নিচ্ছে বলে খবর। সরকারি তালিকা খুঁজেও পর্যাপ্ত সংখ্যক গাড়ি না মেলায় পুলিশকে এ বার রাস্তায় নেমে ভোটের গাড়ি সংগ্রহের কাজও করতে হচ্ছে।
প্রবল গরমে রাজ্য সরকারের বেশির ভাগ স্কুলে ছুটি পড়ে গেলেও বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলের উঁচু ক্লাস এখনও খোলা রয়েছে। পড়ুয়াদের নিয়ে ফেরার পথে প্রবল গরমের মধ্যে বাস থামিয়ে ভোটের কাজে তা ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় নথি পরীক্ষার অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ এলাকার একটি স্কুলের পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরার পথে বাইপাস সংলগ্ন ঢালাই ব্রিজে স্কুলবাস থামিয়ে সেটির নথি পরীক্ষার অভিযোগ ওঠে কর্তব্যরত সার্জেন্টের বিরুদ্ধে। এই কারণে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে
রাস্তায় স্কুলবাস থমকে রয়েছে, এ কথা জানতে পেরে এক পড়ুয়ার অভিভাবক এসে তাকে নিয়ে যান।
গরমের মধ্যে এ ভাবে রাস্তায় বাস দাঁড় করিয়ে রাখার প্রতিবাদ জানালে কর্তব্যরত সার্জেন্ট তাঁকে রূঢ় ভাবে প্রত্যুত্তর দেন বলেও অভিযোগ। ওই পড়ুয়ার অভিভাবক রজত দত্ত জানান, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁর একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে এবং দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বাসে ছিল। দু’জনকেই দীর্ঘক্ষণ বাসে বসে থাকতে হয়। পড়ুয়া-সহ স্কুলবাস আটকে এ ভাবে নথি পরীক্ষার বিরোধিতা করে ওই ব্যক্তি সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানান। যা দেখে অনেকেই পুলিশের আচরণের সমালোচনা করেন। যদিও পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ জানান, ঠিক কোন পরিস্থিতিতে ওই ঘটনা ঘটেছে, তা না জেনে বলা মুশকিল।
তবে স্কুলবাস এবং স্কুলগাড়ি সংগঠন সূত্রের খবর, রাস্তায় বাসের আকাল থাকায় এ বার স্কুলবাস এবং স্কুলগাড়ির উপরে চাপ বেড়েছে। অন্যান্য বার স্কুলগাড়িগুলিকে ভোটের কাজ থেকে রেহাই দেওয়া হলেও এ বার আর তা সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, ‘‘নির্বাচনের কাজে প্রত্যেক বার অল্প সংখ্যক গাড়ি নেওয়া হলেও এ বার চাহিদা বেড়েছে।’’ এ বার নির্বাচনের সময়ে স্কুলে ছুটি চলবে, এমনটা ধরে নিয়েই স্কুলবাস এবং স্কুলগাড়ি নেওয়া হচ্ছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর।