ডাকঘরের মধ্যেই পুরসভার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকাকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল এক কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষিকার পরিচিত এক যুবককেও অভিযুক্ত মারধর করেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার খিদিরপুর উপ ডাকঘরে ঘটনাটি ঘটে। যদিও অভিযুক্ত ডাক কর্মীর দাবি, ওই শিক্ষিকাই তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। শিক্ষিকার পরিচিত যুবকই তার গায়ে প্রথমে হাত তোলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খিদিরপুরের পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমার ভাড়াটেকে আমি উকিল মারফত একটি চিঠি পাঠাই স্পিড পোস্টে। কিন্তু সেই চিঠি ভাড়াটের কাছে না গিয়ে আমার কাছে ফেরত আসে। কারণ হিসেবে বলা হয় ঠিকানা ঠিক নয়। এরপরে বৃহস্পতিবার পোস্ট অফিসে গিয়ে পিওন সুব্রত পাত্রকে বলি, ওই ঠিকানায় এখনও ভাড়াটে আছে। তাহলে আপনি ঠিকানা ভুল বলছেন কেন? এরপরেই সুব্রতবাবু আমাকে অকথ্য গালিগালাজ এবং অশ্লীল কথা বলতে শুরু করেন। আমারই পরিচিত সঞ্জিত মরজু আমার সঙ্গে তখন ছিল। সে ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকে ধরে মারধর শুরু করেন সুব্রতবাবু সহ অন্য কর্মীরা। এরপরে পোস্ট মাস্টার এসে আমাদের ওই ডাক কর্মীদের হাত থেকে উদ্ধার করেন।’’
শুক্রবার সঞ্জিতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দেখা যায়, তাঁর গলায় আচরের দাগ এবং দেহের বিভিন্ন অংশ ফুলে রয়েছে। চিকিৎসক দেখিয়ে সে পুলিশের কাছে অভিযোগও করেছে। সঞ্জিত বলেন, ‘‘ডাকঘরের কর্মীরা ঘিরে ধরে আমায় মারেন। শিক্ষিকা আমাকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় তাঁরা। পোস্ট মাস্টার আমাদের দু’জনকে উদ্ধার করেন।’’
খিদিরপুর উপ ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশকে ডাকতে হয়।’’
ডাকঘরের কর্মীরা অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষিকার সঙ্গে থাকা যুবক সঞ্জিত মরজু প্রথমে পিওন সুব্রত পাত্রকে ঘুষি মারেন। আমরা তখন তাঁকে আটকাই। যদিও সঞ্জুর বক্তব্য, ‘‘আমি কারোর গায়ে হাত তুলিনি। শিক্ষিকাকে বাজে কথা বলায় আমি এক জন মহিলার সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলার জন্য ডাক কর্মীদের অনুরোধ করি।’’
যদিও সঞ্জিতের এই অভিযোগ মানতে নারাজ পিওন সুব্রত পাত্র। তিনি বলেন, ‘‘সঞ্জিতের ঘুষিতে আমার নাক থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে। ওই মহিলাও আমাকে অনেক বাজে কথা বলেন। নাকের রক্ত বন্ধ করা জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। পরে আমি পুলিশকে অভিযোগ জানাই।’’
এই দিন পুলিশের বন্দর ডিভিশনের এক আধিকারিক জানান, দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।