কীটনাশকের বিরুদ্ধে মশাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে এটা নতুন নয়। কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। যে কারণে মশা দমনে রাসায়নিক (রিপেল্যান্ট) ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতাও জারি করেছেন মশা গবেষকদের একাংশ। কিন্তু এ বার ভেষজ প্রক্রিয়ায় মশা দমনের পদ্ধতি কী হবে, ‘ন্যানো সায়েন্স’-এর মাধ্যমে কী ভাবে মশা ধ্বংস করা সম্ভব, তার উপরে গবেষণার পেটেন্ট নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন বাংলারই তিন জন মশার গবেষক। তাঁরা কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষক ও মশা গবেষণাগারের বিজ্ঞানী গৌতম চন্দ্র, বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষক অনুপম ঘোষ এবং গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষিকা অঞ্জলি রাওয়ানি মশা দমনে ন্যানো সায়েন্সের গুরুত্ব নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে গবেষণা করছেন। তাঁরাই পেটেন্টের জন্য আবেদন করেছেন মন্ত্রকে। তাঁদের দাবি, মশা দমনে সক্ষম গাছের এক নতুন প্রজাতি খুঁজে বের করেছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট গাছের রসের সঙ্গে রূপা ও তামার যৌগ মিশিয়ে এক বিশেষ ‘ন্যানো পার্টিকল’ তৈরি করেছেন। ‘সিলভার ন্যানো’ ও ‘কপার ন্যানো’র মাধ্যমে মশার রাজত্ব দ্রুত ধ্বংস করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, গৌতমবাবু নিউ টাউন-কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ ও নবদিগন্ত শিল্পনগরীর মশা নিধন কর্মসূচির মুখ্য পরামর্শদাতা। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘পরীক্ষায় দেখেছি, মশা দমনের উপাদান যত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হবে, ততই তারা টার্গেটে অর্থাৎ মশার আঁতুড়ঘরে সজোরে আঘাত হানবে। তাই ন্যানো পার্টিকল তৈরির ভাবনা।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার, বিশ্ব মশা দিবসেও গবেষকদের আলোচনায় ঘুরেফিরে এসেছে কীটনাশকের বিরুদ্ধে মশার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি। অনুপমবাবুর কথায়, ‘‘আগে যে মাত্রার রাসায়নিক ব্যবহার করলে মশা ধ্বংস করা সম্ভব হত, এখন আর তা সম্ভব নয়।’’ অঞ্জলিদেবী বলছেন, ‘‘পরীক্ষাগারে ইতিমধ্যেই সিলভার ও কপার ন্যানো পার্টিকল ব্যবহার করে মশার লার্ভা ধ্বংস করতে পেরেছি। এ বার দেখা যাক কী হয়!’’