টাটকা সামুদ্রিক কোবিয়া এ বার শহরের বাজারে

সমুদ্রের টাটকা মাছ আসতে চলেছে কলকাতার বাজারে। কথাটা অবিশ্বাস্য ঠেকলেও তা বাস্তবায়নের পথে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

সমুদ্রের টাটকা মাছ আসতে চলেছে কলকাতার বাজারে। কথাটা অবিশ্বাস্য ঠেকলেও তা বাস্তবায়নের পথে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। তামিলনাড়ুর মান্দাপাম থেকে বিমানযোগে সোমবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছেছে ৮০০টি কোবিয়া মাছের চারা। রাতেই সেগুলি বিশেষ অক্সিজেন প্যাকেটে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার হেনরি আইল্যান্ডের নোনা জলের পুকুরে ফেলা হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে পুকুরে এহেন সামুদ্রিক মাছ চাষ ভারতে এই প্রথম বলে দাবি রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের কর্তাদের।

Advertisement

তামিলনাড়ুর মান্দাপামের সেন্ট্রাল মেরিন ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট আগেই বঙ্গোপাসাগরের মধ্যে খাঁচা তৈরি করে এই মাছ চাষ করছে। মান্দাপামের চাষীরাও এই মাছ চাষ করে ব্যক্তিগত ভাবে সফল হয়েছেন। রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘কোবিয়া মাছ চাষ করতে আমরা বঙ্গোপসাগর লাগোয়া পুকুর কেটেছি। সমুদ্রের নোনা জল যাতে জোয়ারের সময় ঢুকতে পারে সে জন্য স্লুইস গেটও রয়েছে।’’ মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, মাস খানেক আগে মান্দাপাম থেকে মৎস্য বিজ্ঞানীরা হেনরি আইল্যান্ডে এসে ওই পুকুরের জল পরীক্ষানিরীক্ষা করেও দেখে গিয়েছেন।

কোবিয়া মূলত সামুদ্রিক মাছ। ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরে থাকা কোবিয়া মাছ সর্বাধিক ২০ কেজি পর্যন্ত বাড়তে পারে। বাঙালির পাতে ভেটকি মাছের মতোই ইউরোপ, আমেরিকায় কোবিয়া জনপ্রিয়।
এটি মূলত গ্রিলড বা বেকড
আইটেম হিসাবে খ্যাত। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘রুই, কাতলা, মৃগেল, ভেটকির গতানুগতিকতার বাইরে বাঙালির পাতে ভিন্ন মাছ পৌঁছে দিতে আমরা আগ্রহী। পুকুরে চাষ পরীক্ষামূলক ভাবে সফল হলে চাষীদের বিনামূল্যে কোবিয়া মাছের চারা বিতরণ করা হবে। এই মাছ চাষের পদ্ধতিও মৎস্য দফতরের তরফে মাছ চাষীদের শেখানো হবে।’’

Advertisement

মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, মান্দাপাম থেকে আসা এক একটি চারার ওজন গড়ে ১৫ গ্রাম। প্রতিটির দাম পড়েছে ৩০ টাকা। নিগমের জেনারেল ম্যানেজার বিজনকুমার মণ্ডলের দাবি, ‘‘পুকুরের আদর্শ আবহে কোবিয়ার চারা ৬ মাসে পাঁচ কেজি পর্যন্ত বাড়বে। এই মাছের
খাবার আনা হয়েছে তাইল্যান্ড থেকে।’’ বাম আমলে হেনরি আইল্যান্ডে একটি ফিস সিড ব্রিডিং হ্যাচারি তৈরি হলেও এখন
অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ওই হ্যাচারি সংস্কার ও আধুনিকীকরণের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রায় ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা অনুমোদন মিলেছে। নিগমের এমডি জানান, ওই টাকা হাতে পেলে হেনরি আইল্যান্ডে কোবিয়ার প্রজনন করা সুবিধা হবে। ফলে চাষীদেরও এই মাছ চাষে উৎসাহী করা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন