Safe home

রোগী পালানো ঠেকাতেই সেফ হোমে বাড়তি নিরাপত্তা?

পুরসভা সূত্রের খবর, রাজারহাটের কোয়রান্টিন কেন্দ্র ও আনন্দপুরের সেফ হোমে আপাতত বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হবে।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতা পুরসভার অধীন যে সমস্ত সেফ হোম রয়েছে, তাতে বাড়তি নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করতে চলেছে পুর প্রশাসন। আপাতদৃষ্টিতে এই নিয়োগে অস্বাভাবিকতা নেই। সেফ হোমের নিরাপত্তা ও নজরদারি জোরদার করতে রক্ষী নিয়োগ করা যেতেই পারে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে মাঝেমধ্যেই সেফ হোমগুলি থেকে কোভিড-রোগীদের পালানো বা বেরিয়ে পড়ার ঘটনা বিষয়টিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে বলে মনে করছেন পুরকর্তাদের একাংশ। তাঁদের ব্যাখ্যা, নিরাপত্তা বাড়ানো তো বটেই, একই সঙ্গে সেফ হোমগুলি থেকে যাতে কোনও কোভিড-রোগী স্বেচ্ছায় বেরিয়ে পড়তে বা পালাতে না পারেন, তাই আরও আঁটোসাঁটো হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, রাজারহাটের কোয়রান্টিন কেন্দ্র ও আনন্দপুরের সেফ হোমে আপাতত বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হবে। ওই দু’টির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পুরসভারই। বালিটিকুরিতেও পুরসভার একটি সেফ হোম ছিল। বর্তমানে সেটি

রাজ্য সরকার নিয়েছে। কোভিড হাসপাতাল তৈরি হবে সেখানে। একই ভাবে গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে তৈরি সেফ হোমেও নিরাপত্তারক্ষী

Advertisement

নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরে যদি প্রয়োজন হয়, তা হলে আলিপুরের উত্তীর্ণ অডিটোরিয়ামেও সেফ হোম তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘সেফ হোমগুলিতে নিরাপত্তারক্ষী ছিলই। কিন্তু প্রস্তাবিত সেফ হোমগুলিতে আরও ১০-১৫ জন করে রক্ষী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

হঠাৎ সেফ হোমের নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হল কেন?

মূলত দু’টি কারণ খুঁজে পাচ্ছেন স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অনেকে। তাঁদের ব্যাখ্যা, প্রথমত, কোভিড রোগীদের ইচ্ছেমতো বেরিয়ে পড়ার ঘটনা আটকানোর চেষ্টা। দ্বিতীয়ত, সেফ হোমগুলিতে বাইরের কেউ চট করে যাতে না ঢুকতে পারেন, সেটাও সুনিশ্চিত করা। বহিরাগতদের আটকানোর জন্য নিরাপত্তার কথা বলা হচ্ছে ঠিকই। আসলে সেফ হোমের পরিকাঠামো কেমন, তা যাতে প্রকাশ্যে না আসে সেটাও দেখা হচ্ছে। এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, ‘‘এখন তো যে কেউ মোবাইলে ভিডিয়ো তুলে নিয়ে তা প্রচার করতে পারেন। তাতে সেফ হোমগুলির অবস্থা সামনে চলে আসবে। সেটা যাতে না হয়, এ জন্যই মনে হয় এই পদক্ষেপ।’’

এর আগে একাধিক বার কোভিড আইসোলেশন সেন্টার এবং সেফ হোমগুলির পরিকাঠামো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক তরজাও বাদ যায়নি। চলতি মাসেই

বারাসত স্টেডিয়ামে তৈরি সেফ হোমে সাপের উপদ্রব রয়েছে, এই অভিযোগে কয়েক জন কোভিড রোগী সেখান থেকে বেরিয়ে এসে চেঁচামেচি করেছিলেন। কোভিড কেন্দ্রের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সেফ হোম, কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো নিয়ে শুরু থেকেই সমস্যা ছিল। রোগীদের একাংশ প্রথম থেকেই এ সব নিয়ে ক্ষোভ দেখিয়েছেন। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। সব বিতর্কই অমূলক, সেটা বলা যাবে না।’’

পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, সেফ হোমগুলির নিরাপত্তা বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। সংস্থার মাধ্যমে শুধু নিরাপত্তারক্ষী নয়, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে সাফাইকর্মীও নিয়োগ করা হচ্ছে। এ জন্য দরপত্রের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এক পুর কর্তার কথায়, ‘‘সেফ হোমগুলির সার্বিক উন্নয়নের জন্যই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্য কারণ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন