গৃহকর্মীকে বেধড়ক মার, ধৃত ভাইবোন

চুরির অভিযোগ তুলে বাড়ির পরিচারিকাকে বেধড়ক মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের পরিবারের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৫
Share:

প্রহৃত মিনা রাও। শুক্রবার, গোলাবাড়ি থানায়। নিজস্ব চিত্র

চুরির অভিযোগ তুলে বাড়ির পরিচারিকাকে বেধড়ক মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের পরিবারের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, সালকিয়ার একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন হাওড়ার বাউ়ড়িয়ার বাসিন্দা, বছর পঞ্চান্নের মিনা রাও। মিনাদেবীর অভিযোগ, চোর অপবাদ দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখে ওই পরিবার।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সালকিয়ার স্কুল রোডের ছোটমাল ছাজর নামে এক চিকিৎসকের বাড়িতে। এই ঘটনায় ওই চিকিৎসকের ছেলে অরবিন্দ ছাজর ও মেয়ে নেহা ছাজরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চিকিৎসকের স্ত্রী সুরজদেবী ছাজরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সকালেও সালকিয়া স্কুল রোডের ওই বাড়িতে কাজে এসেছিলেন মিনাদেবী। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ছ’টায় তিনি যখন ঘর ঝাঁট দিচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ নেহা ও অরবিন্দ তাঁকে পিছন থেকে লাথি মারতে শুরু করেন। সঙ্গে কিল, চড় ও ঘুসি। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘরে রাখা একটি রড নিয়ে এসে তাঁকে মারা হয়। বলা হয়, কয়েক দিন ধরে যে টাকা তিনি চুরি করেছেন, সেটা যেন এখনই ফেরত দেন। মিনাদেবী বলেন, ‘‘বারবার বলতে থাকি, আমি টাকা চুরি করিনি। কিন্তু ওরা কোনও কথা শোনেনি। আমাকে রড দিয়ে পেটাতেই থাকে।’’ মিনাদেবীর অভিযোগ, মারধর করেই নির্যাতন শেষ হয়নি। তাঁকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরে দুপুর ১২টা নাগাদ তাঁকে মুক্তি দিয়ে বলা হয়, পুলিশ বা অন্য কোথাও বললে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।

Advertisement

মিনাদেবীর দুই ছেলে ও সাত বছরের একটি মেয়ে আছে। ওই মহিলা জানান, প্রথমে তিনি ভয়ে কোথাও কিছু না জানিয়ে বাস ধরে ফিরে যান বাউড়িয়ায়। বাড়িতে সব কিছু বলেন। মিনাদেবীর এক আত্মীয়া বলেন, ‘‘ওকে ওরা এতটাই অত্যাচার করেছিল যে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালশিটে পড়ে গিয়েছিল। অত্যাচারের ওই বহর দেখে আমরা সবাই ওকে গোলাবাড়ি থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করি।’’ হাওড়ার এসিপি (নর্থ) রাহুল দে বলেন, ‘‘আমরা বিকেলে অভিযোগ পাওয়ার পরেই দ্রুত ব্যবস্থা নিই। চিকিৎসকের ছেলে অরবিন্দ ও মেয়ে নেহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মারধরের অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

সালকিয়ার স্কুল রোডের ওই বাড়ির মালিক, চিকিৎসক ছোটমাল ছাজর কর্মসূত্রে আগরতলায় থাকেন। সালকিয়ায় থাকেন তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়ে। নেহা একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা। অরবিন্দ পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। এ দিন ছোটমাল ছাজরের স্ত্রী সুরজদেবী বলেন, ‘‘মিনা আমাদের বাড়ি থেকে টাকা চুরি করেছিল। কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছে। তবে ওকে মারধর ও আটকে রাখার অভিযোগ মিথ্যা। রাস্তায় পড়ে গিয়ে ওর চোট লেগে থাকতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন