Murder Case

গলার নলি কেটে খুন, নেশার আসর না কি প্রোমোটার-যোগ?

পরিবারের অন্য সদস্যেরা এ দিন দেহটি দেখে ১০০ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। মৃতের পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪ ০৮:২১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মুখে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। গলার নলির কাছে ধারালো কিছু দিয়ে চেরা। আশপাশে পড়ে চাপ চাপ রক্ত। শনিবার সকালে বাঁশদ্রোণী থানার অন্তর্গত সোনালি পার্ক এলাকায় নিজের ঘর থেকে এই অবস্থাতেই উদ্ধার হল এক ব্যক্তির দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রামকৃষ্ণ নন্দী। পেশায় রাজমিস্ত্রি রামকৃষ্ণের বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

পরিবারের অন্য সদস্যেরা এ দিন দেহটি দেখে ১০০ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। মৃতের পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। তবে, রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

পুলিশ সূত্রের খবর, সোনালি পার্কের বাড়িতে একাই থাকতেন রামকৃষ্ণ। তাঁর ১৪ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ছেলের ছ’মাস বয়সেই রামকৃষ্ণের স্ত্রী ক্যানসারে মারা যান। তার পর থেকে ছেলেটি রামকৃষ্ণের দাদার পরিবারেই মানুষ হচ্ছে। মৃতের দাদা কার্তিকচন্দ্র নন্দীর স্ত্রী নমিতা এ দিন বলেন, ‘‘রামকৃষ্ণ আমার ছোট দেওর। ওরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। দুই ভাই আগেই মারা গিয়েছিল। এ বার রামকৃষ্ণ চলে গেল। তিন বোনের এক জন বেঁচে। আমরা সকলে মিলে একটা জায়গা কিনেছিলাম।সেখানে প্রোমোটিং হওয়ার কথা ছিল। ঠিক হয়েছিল, প্রত্যেকে একটি করে দোকান ও ফ্ল্যাট পেলেই হবে। রামকৃষ্ণকে রাজি করানো যাচ্ছিল না। সে ফ্ল্যাট, দোকানের পাশাপাশি তিন লক্ষ টাকাও চাইছিল।’’

Advertisement

নমিতার ছেলে কৌশিক নন্দী বলেন, ‘‘কাকা যে বাড়িতে একা থাকে, সেটা পাশেই। ভোরে মা হাঁটতে যায়। এ দিন ফেরার সময়ে কাকার দুই বন্ধু, বিক্রম আর পরেশ মাকে দেখতে
পেয়ে ডেকে নিয়ে যান। মা ঘরের দরজা ঠেলা দিতেই খুলে যায়। দেখে, বিছানায় কাকা পড়ে আছে। সারা মুখে আঘাতের চিহ্ন আর গলার নলি কাটা। আমিই ১০০ ডায়ালে ফোন করে বিষয়টি জানাই। পুলিশ কাকার ছেলেকে নিয়ে গিয়েছে। বাবার কাছে ভাই প্রতিদিন যায়। কাল রাতে গিয়েছিল কি না, সে সবই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ কৌশিকের দাবি, রামকৃষ্ণ মদ্যপান করে বাড়িতে ঢুকে চেঁচামেচি করতেন। বাড়িতেও বসত মদের আসর।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার ধারের পাঁচ কাঠা জমির উপরে টালির বাড়িটি। তার তিনটি ঘরের একটিতে থাকতেন রামকৃষ্ণ। উঠোনে খোলা কুয়ো, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে নির্মাণসামগ্রী। বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বাইরে পুলিশি পাহারা। প্রতিবেশী পীযূষ বিশ্বাস বললেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই এই বাড়িতে মদের আসর বসত। কথা-কাটাকাটিও শোনা যেত। তবে গত কাল তেমন হয়েছে কি না, বলতে পারব না।’’ অন্য এক প্রতিবেশী বললেন, ‘‘রামকৃষ্ণ কাদের সঙ্গে মিশত, কী করত, খোঁজ করলেই বেরিয়ে যাবে সব।’’ লালবাজার জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। মৃতের পরিচিতদের নামের তালিকা তৈরি করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন