Students Counselling

স্কুলে হেনস্থা রোধে কাউন্সেলিং করাক সরকার, প্রস্তাব শিক্ষকদের

হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানান, শিক্ষা দফতর থেকে প্রতিটি স্কুলে কাউন্সেলর নিয়োগ করা হলে পড়ুয়াদের সার্বিক উপকার হবে। তাঁর মতে, স্কুলে হেনস্থা করার মতো ঘটনা তো ঘটেই।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৩ ০৪:৩৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সহপাঠীকে হেনস্থা (বুলিং) করার প্রবণতা বন্ধ করতে পড়ুয়া এবং প্রয়োজনে অভিভাবকদেরও কাউন্সেলিং করানোর জন্য স্কুলে কাউন্সেলর নিয়োগ করার প্রস্তাব দিচ্ছেন শহরের সরকারি স্কুলশিক্ষকেরা। স্কুলেও যে সহপাঠীকে হেনস্থার ঘটনা ঘটে, মেনে নিয়েছেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, যাদবপুরের মতো ঘটনা আটকাতে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের কাউন্সেলিং করানোর প্রয়োজন।

Advertisement

যেমন, যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানান, কোনও পড়ুয়াকে হেনস্থা করার অভিযোগ মাঝেমধ্যেই স্কুল থেকে তিনি পান। শ্রেণিকক্ষে বসার জায়গা নিয়ে কোনও দুর্বল ছাত্রকে হেনস্থা করা কিংবা জোর করে টিফিন খেয়ে নেওয়ার অভিযোগ শোনা যায়। পার্থ বলেন, ‘‘এগুলো বন্ধ করতে নিজেদের উদ্যোগে পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং শুরু করেছি। ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং চলছে। তবে অভিভাবকদেরও কাউন্সেলিং শুরু হবে। কারণ, বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, পড়ুয়াদের ভিন্ন আচরণের পিছনে অভিভাবকেরা দায়ী থাকেন।’’

যদিও হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত মনে করেন, শিক্ষা দফতর থেকে প্রতিটি স্কুলে কাউন্সেলর নিয়োগ করা হলে তাতে পড়ুয়াদের সার্বিক উপকার হবে। তাঁর মতে, স্কুলে হেনস্থা করার মতো ঘটনা তো ঘটেই। যেমন, পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্র আর এক ছাত্রকে শাসিয়ে বলেছিল, খাতা না দেখালে তাকে স্কুলের বাইরে দেখে নেবে। এটা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিল ওই ছাত্র। তখন সে কাউকে বলতেও পারেনি। পরে জানতে পেরে তার কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। শুভ্রজিৎ বলেন, ‘‘আমাদের পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের দরকার হলে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে এবং রাজডাঙায় জগদীশ বসু ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ-এর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। ওই দুই জায়গায় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা আছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘স্কুলপিছু কাউন্সেলর নিয়োগ না হলেও ৩-৪টি সরকারি স্কুলকে একসঙ্গে করেও যদি কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা হয়, তাতেও পড়ুয়ারা উপকৃত হবে।’’

Advertisement

বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমির শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্তেরও মত, স্কুল স্তর থেকেই কাউন্সেলিং শুরু করা জরুরি। তিনি জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক পড়ুয়া খুব বেশি পাওয়ারের চশমা পরে আসে। তাকে নিয়ে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের বিদ্রুপ করতে দেখেছেন তিনি। এর পরে ওই পড়ুয়ার সহপাঠীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। শিক্ষকেরা তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, কেউ ওকে বিদ্রুপ করলেই শিক্ষকদের জানাতে হবে। সুমনা বলেন, ‘‘সম্প্রতি শিক্ষা দফতরের অধীনে স্কুলে যে কর্মসূচি হল, সেখানে তিন দিনের বইমেলার শেষ দিনে ঠিক হয়েছে, প্রয়োজনে পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করা হবে। এই বিষয়ে সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছেন স্থানীয় থানার অফিসারেরা।’’

বেসরকারি অনেক স্কুলেই অবশ্য নিজস্ব কাউন্সেলর রয়েছেন। লা মার্টিনিয়ার বা সাউথ পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলের নিজস্ব কাউন্সেলর আছেন। তাঁরা পড়ুয়াদের সমস্যা বুঝে কাউন্সেলিং করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন