মোবাইল ফোন রয়েছে পকেটেই। অথচ তাঁর হোয়াটস্অ্যাপ থেকে বিভিন্ন লোকের কাছে অশ্লীল মেসেজ চলে যাচ্ছে! দিন কয়েক আগে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে এই শহরের এক বাসিন্দার। এর পরেই লালবাজারের কাছে হোয়াটস্অ্যাপ হ্যাকিংয়ের অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। মামলা রুজু করে তদন্তে নামলেও শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তের হদিস পাননি গোয়েন্দারা।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই সাইবার নিরাপত্তার নতুন একটি সমস্যা সামনে উঠে এসেছে। সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং গোয়েন্দাদের একাংশ বলছেন, এখন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে হোয়াটস্অ্যাপ কার্যত সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। ফলে হ্যাকারেরা এটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হলে বিপদ আরও বা়ড়বে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, অনেক সময়েই ফোনে বিভিন্ন অজানা অ্যাপ্লিকেশন লোকে ডাউনলো়ড করে। কিন্তু তার ভিতরে কোনও ক্ষতিকর প্রোগ্রামিং বা ভাইরাস রয়েছে কি না, তা যাচাই করেন না। এই ধরনের প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমেই ফোনের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য বেরিয়ে যেতে পারে। যা দিয়ে হ্যাকারেরা হোয়্যাটস্অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। দ্বিতীয়ত, অনেক সময়ে হোয়্যাটস্অ্যাপে বিভিন্ন ভিডিও ছড়ানো হয়। তার ভিতরে লুকিয়ে রাখা হয় ভাইরাস। ভিডিও ডাউনলোড করলে ভাইরাস ফোনে বাসা বেঁধে হ্যাকারকে তার নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে কী ভাবে হ্যাকার হোয়্যাটস্অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
লালবাজারের একটি সূত্রে জানানো হচ্ছে, বছর দুই আগে হোয়্যাটস্অ্যাপ নিয়ে এমন একটি অভিযোগ উঠেছিল। তাতে জানা গিয়েছিল, একটি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কোনও একটি নম্বর জানালে তার আগের ও পরের কয়েকশো নম্বরের হোয়্যাটস্অ্যাপ প্রোফাইল জানা যাচ্ছিল। তখন এ নিয়ে গুগল ও হোয়্যাটস্অ্যাপের সংস্থায় চিঠিও পাঠানো হয়েছিল বলে লালবাজারের খবর।
যদিও এই ধরনের তদন্ত কতটা এগোবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে পুলিশের অন্দরেই। অনেক সময়েই বিদেশি সংস্থাগুলির কাছ থেকে তদন্তের স্বার্থে তথ্য চেয়ে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি শিলিগুড়ির একটি মামলায় এ ব্যাপারে হাইকোর্টে নিজের বক্তব্য জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এ ক্ষেত্রেও শেষমেশ হোয়্যাটস্অ্যাপ হ্যাকিংয়ের সুরাহা হয় কি না, সেটাই দেখার।