বেদখল: ফুটপাত জুড়ে থাকা দোকান।
এক দিকের ফুটপাতের পেভার ব্লক উঠে গিয়ে কঙ্কালসার অবস্থা। সেই ফুটপাথেই ঝাঁকা নিয়ে কেউ বসে পড়েছেন ফল বেচতে। কেউ আবার প্লাস্টিকের বালতি থেকে শুরু করে নানা জিনিসের পসরা নিয়ে বসে পড়েছেন। ফলে ফুটপাথ দিয়ে হাঁটাচলা করার কার্যত জায়গা নেই। এ ছবি রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঠিক বাইরের।
হাসপাতালের উল্টো দিকের ফুটপাত জুড়ে রয়েছে খাবারের দোকান। ভাত-রুটি থেকে শুরু করে চাউমিন, এগরোল— রকমারি খাবারের পসরা সাজিয়ে রয়েছে পরপর সব দোকান। কিন্তু যেটি নেই তা হল, পথচারী বা হাসপাতালে আসা অসংখ্য রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের সুষ্ঠু ভাবে হাঁটার জায়গা। ফুটপাতের উপরেই টুল রেখে বসিয়ে চলে খাবারের আয়োজন। সকাল-বিকেল বাসস্ট্যান্ডের বসার জায়গাটুকুও খাওয়ার টেবিল-চেয়ারে বদলে যায়। খরিদ্দারদের বসিয়ে খাবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা আছে সেখানে।
খাবারের উচ্ছিষ্ট থেকে শুরু করে বাসন ধোওয়া, সবই চলে ফুটপাতে বসেই। ফলে নোংরা জল জমা হচ্ছে রাস্তার ধারে। ফুটপাত নয়, সাধারণ পথচারী কিংবা হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের তাই পথই ভরসা। দ্রুত গতিতে চলে যাওয়া গাড়ির পাশ দিয়ে প্রাণ হাতে করেই যাতায়াত করেন তাঁরা।
দখল হয়ে গিয়েছে স্ট্যান্ড, পাশেই দাঁড়িয়ে বাসের প্রতীক্ষায় যাত্রী।
পথ দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত নিয়ে এই হাসপাতালেরই জরুরি বিভাগে ভর্তি এক রোগীর দিদির কথায়, ‘‘খাবারের দোকানগুলি রয়েছে বলে আমাদের খাবারের জন্য দূরে কোথাও ছুটতে হয় না। দামও সাধ্যের মধ্যে। কিন্তু রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলেই ভয় করে। কারণ ফুটপাত দিয়ে তো হাঁটার জায়গাই নেই।’’
অথচ পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, ফুটপাতে হকার বসলেও পথচারীদের জন্য তিন ভাগ জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু নিয়ম আছে খাতায়কলমে। শহরের অন্য প্রান্তের মতো এত বড় একটা হাসপাতালের বাইরেও একই অবস্থা কেন?
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার নিজেও ওই ফুটপাতের দখল নিয়ে চিন্তিত। তাঁর কথায়, ‘‘যাতায়াতের পথ ছেড়ে ব্যবসা করার জন্য আমরা বারবার হকারদের অনুরোধ। তার পরেও সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখছি কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’’
ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।