মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতির উপরে বিশ্বাস রেখে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকে।
ফের তেমনই ঘটল সল্টলেকে। এ বার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণের কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠল। কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা হয়নি, মেলেনি টাকাও।
তদন্তে নেমে বিধাননগর পুলিশ বড়সড় একটি চক্রের হদিস পায়। এতে একাধিক ব্যক্তি প্রতারিত হয়েছেন এবং কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা করা হয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ডানকুনি এবং নিউ টাউন থেকে ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে সুরজ কুমার (২৫), অভিষেক নায়েক ওরফে প্রতীক সিংহ (৩২), রামপ্রসাদ ঘোষ (২৭), সৈকত সরকার (৩০), সাহলাম সেলিম (৩৬) এবং নাসিম আনোয়ার (৩০)।
উদ্ধার হয়েছে বহু নথি, ৪০ হাজার টাকা, বহু গেজেট, পাসপোর্ট ইত্যাদি। পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে এমবিএ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ তরুণেরাও রয়েছেন। শুক্রবার বিধাননগর আদালত তিন জনের পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত এবং বাকিদের জেল হেফাজত দেয়।
পুলিশ জানায়, সল্টলেকের সি কে ব্লকের ১৪৯ নম্বর বাড়িতে ভাড়া নিয়েছিল আর এস সলিউশন নামে এক সংস্থা। দমদমের এক তরুণকে ওই সংস্থার তরফে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ২০১৭-এ ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্টে (এনইইটি) বসেছিলেন। গত বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝে তিনি ওই সংস্থায় যান এবং তাঁকে আর জি করে ডোনার্স কোটায় ভর্তি করানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বদলে নেওয়া হয় ১৫ লক্ষ টাকা। কাজ না হওয়ায় ওই তরুণ সল্টলেকের ওই ঠিকানায় খোঁজ করে দেখেন, সেখানে অফিসটি নেই। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ জানান ওই তরুণের এক আত্মীয়।
পুলিশ জানতে পারে, বছর দেড়-দুই ওই ঠিকানায় অফিসটি খোলা ছিল। সংস্থার কর্মীরা মূলত পরীক্ষার্থীদের খুঁজে ফোনে যোগাযোগ করত। সেই সূত্রে ধৃতদের খোঁজ মেলে। এর আগেও মেডিক্যাল কলেজের ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা হয়। পাশাপাশি, ফোনেও প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। ওয়েবসাইট পরীক্ষা না করে কিংবা সংস্থা সম্পর্কে খবর না নিয়ে কী ভাবে বিশ্বাস করছেন প্রতারিতেরা?
সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, ভুয়ো ওয়েবসাইটে নজরদারি চালানো মুশকিল। তবে নামী কোনও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমন ওয়েবসাইট দেখলে সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন।