তপসিয়ার বস্তির অন্ধকার ঘর থেকে শুরু হয়েছিল যাত্রাটা। এ বার তা ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশে! সৌজন্যে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক।
বস্তির ঘুপচি ঘরে দিনের বেলায় যাতে বৈদ্যুতিক আলো না জ্বালাতে হয়, তার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘সোলার ডোম’ তৈরি করেছিলেন অপ্রচলিত শক্তি বিশেষজ্ঞ শান্তিপদ গণচৌধুরী। স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি বেসরকারি সংস্থা তা বিলি করেছিল তপসিয়ার বস্তিতে। সূর্যের আলো প্রতিফলিত করেই এলইডি-র মতো আলো জ্বালাত সেই ‘ডোম’। তপসিয়ার সাফল্যের পরে সেই প্রযুক্তিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন শান্তিপদবাবু। ওই ‘ডোম’-এ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করে রাতেও আলো জ্বালানোর বন্দোবস্ত করেছেন তিনি। টালির বা অ্যাসবেস্টসের চাল সামান্য কেটে এটা বসিয়ে দিলেই কাজ হবে।
পরিবেশকর্মীদের অনেকেই বলছেন, ঘুপচি ঘরের অন্ধকার কাটাতে বস্তিবাসীদের অনেকেই বেশি খরচ করে আলো জ্বালান। কেউ কেউ আবার কুপি বা মোমবাতিও ব্যবহার করেন। সেগুলি থেকে অনেক সময়ে আগুন লেগে বিপত্তিও ঘটে। এই কারণেই বস্তি এলাকায় এ ধরনের যন্ত্রের প্রসার ঘটাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক সূত্রের খবর, যন্ত্রপিছু ৩০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি যাতে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করা যায়, তার জন্য ২৫টি বেসরকারি সংস্থাকে বেছে নিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্তারা। শান্তিপদবাবু বলছেন, এই ‘ডোম’-এর সাহায্যে রাতে ৫০ ওয়াট বাল্বের মতো আলো মিলবে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, গরমকালে রাতে ৫ ঘণ্টা এবং শীতকালে ৪ ঘণ্টা আলো মিলবে।
গরিবদের কথা ভেবেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই ডোমের দাম কি গরিবদের নাগালে থাকবে? শান্তিপদবাবু বলছেন, বাজারে এই যন্ত্রের দাম হবে প্রায় ১২০০ টাকা। ভর্তুকি দেওয়ার ফলে তার দাম ৮০০ টাকার কাছাকাছি নেমে আসবে। এক লপ্তে দাম বেশি হলেও এই যন্ত্র এক বার লাগালে তা প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত চলবে। ফলে বারবার আলো লাগানোর থেকে এটা লাভজনক হবে বলে দাবি করছেন তিনি।