দখল: বারাসত স্টেশনের কাছে ওই সেতুর নীচে এ ভাবেই পসরা নিয়ে বসেন বহু হকার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
কালীপুজোর পরে শহরের হকার-সমস্যার স্থায়ী সমাধানে নামবে পুর প্রশাসন। বাগড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে হকারদের সম্পর্কে আরও সতর্ক হতে চায় পুর প্রশাসন এবং পুলিশ। হকারদের টাঙানো পলিথিন ও প্লাস্টিকের ছাউনির কারণে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, এ বার তার দিকে নজর দিতে চায় তারা। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরভবনে নবগঠিত টাউন ভেন্ডি কমিটির প্রথম বৈঠকে তেমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মোট ১৮ জনের কমিটিতে হকারদের আট জন প্রতিনিধি ছিলেন। ঠিক হয়েছে, দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর পর্ব চুকলে হকারদের নিয়ে সমীক্ষা করা হবে। ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, শহরে হকারদের বিশেষ কার্ড দেওয়া হবে। সেই মতো কলকাতার ১৬টি বরো এলাকায় হকারদের আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। প্রায় ৫৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল তখন। এ দিনের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠতেই ঠিক হয়, আবেদনপত্র সঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি চলবে সমীক্ষার কাজও। কোন বাজারে কত হকার, কত দিন ধরে তাঁরা রয়েছেন, সে সব দেখা হবে। কোনও হকারের ডালা অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে কি না, তারও খোঁজ নেওয়া হবে।
আরও একটি বিষয় নিয়ে চিন্তায় পড়েছে পুরসভা। তা হল নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট-সহ শহরের একাধিক বাজারে পথ বা দোকান আটকে বসে পড়েছেন হকারেরা। কোথাও বা বাড়ির সামনেও রয়েছেন হকার। তাতে ওই সব বাজার, দোকান ও বাড়িতে ঢোকার পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৈঠকে ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি সেই প্রসঙ্গ তোলার চেষ্টা করেন। কমিটির কো-চেয়ারম্যান, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘বাগড়ির ঘটনার পরে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। বাজারের সামনে পলিথিনের ছাউনি থাকলে তা থেকে বিপদ হতেই পারে।’’ বাজারগুলিকে বিপন্মুক্ত করতে টাউন ভেন্ডিং কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি, হকারদের অভাব-অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।
হকার প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, শহরের মোট জনসংখ্যার ২.৫ শতাংশ হকার থাকতে পারেন। সেই হিসেবে কলকাতায় লক্ষাধিক হকার থাকতে পারেন। তাঁদের বৈধ কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি। আগামী নভেম্বর মাসে ফের বৈঠক হবে ওই কমিটির।