বিক্রম চট্টোপাধ্যায়
কেউ মনে করছেন ষোলো দিনের অভিজ্ঞতায় জীবনের উদ্দাম গতিতে রাশ টানতে শিখবেন তিনি। ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ না করার কথা বলেছিলেন যাঁরা, তাঁদেরই কেউ কেউ ফের কাজের আগ্রহও প্রকাশ করলেন। আর যাঁরা মডেলের মৃত্যুর সুবিচার চেয়েছেন, এখনও আশায় বুক বেঁধে আছেন তাঁরা। আর অনুরাগীরা? তাঁদের কাছে, এ যেন লড়াইয়ের প্রথম ধাপ পার হওয়া। বুধবার অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায় জামিন পাওয়ার পরে তাঁকে ঘিরে দিনভর চলল এমনই উচ্ছ্বাস, আক্ষেপ, চিন্তা।
বিক্রম যে জনপ্রিয় ধারাবাহিকে কাজ করতেন, সেটির লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিক্রম জামিন পেয়েছে শুনে ভাল লাগছে। একটা বাচ্চা ছেলে এতদিন খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল।’’ তিনি কি ভবিষ্যতে আবার কাজ করবেন বিক্রমের সঙ্গে? ‘‘ওর সঙ্গে চ্যানেল কাজ করতে চাইলে আমার আপত্তি নেই,’’ স্পষ্ট জানালেন লীনাদেবী।
খারাপ সময় থেকে শিক্ষা নিয়ে বিক্রম নতুন করে কাজে যোগ দিন, এমনটাই চান অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যেরও আশা, আরও সাবধানী হবেন বিক্রম। তিনি বলেন, ‘‘যা হয়েছে, সেটা দুঃখজনক। কিন্তু সন্তান জেলে থাকলে বাবা-মায়ের মনের অবস্থা কী হয়, সেটা ভাবা যায় না। ওঁর বাবা-মা একটু স্বস্তি পাবেন।’’ বিক্রমের জামিনের খবরে খুশি অভিনেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীও। ‘‘আশা করছি দ্রুত ওঁকে ভাল কাজ করতে দেখতে পাব,’’ বললেন তিনি।
এত কিছুর মধ্যেও হাল ছাড়ছে না মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের পরিবার। এই জামিনকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব না দিয়েই সুবিচারের অপেক্ষায় তারা। পরিবারের তরফে জানানো হয়, পুলিশের চার্জশিট পেশের পরে জামিন পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এখনও বিচার বিভাগের উপরে আস্থা রাখছে তারা। সোনিকার বাবা-মায়ের একটাই আর্জি, দ্রুত বিচার শুরু হোক। সত্যের জয় হোক। সোনিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না। জানিয়ে দেন, আইনজীবীদের পরামর্শ মতো বিচারবিভাগীয় বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না তিনি। মন্তব্য করতে নারাজ সোনিকার বন্ধু ও এই মামলার সাক্ষী অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ও। বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে বয়ান দিয়েছি। তাই বিচারাধীন বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। কী হয়েছিল, এতদিনে সকলের কাছে তা পরিষ্কার।’’
তবে এত কিছু নিয়ে ভাবতে নারাজ বিক্রমের অনুগামীরা। অভিনেতার জামিনের অপেক্ষায় মঙ্গলবার রাত থেকেই ফেসবুকে ‘ভয়েস ফর বিক্রম’ গ্রুপে জমতে থাকে ‘শুভ কামনা’র ভিড়। বুধবার জামিনের খবর জানাজানি হতেই ফের হই চই শুরু হয় গ্রুপে। সে সব পোস্টের সমালোচনা করে ক্ষোভ জমতে থাকে ‘জাস্টিস ফর সোনিকা’ গ্রুপে। কেউ কেউ বলেন, প্রভাব খাটিয়েছেন অভিনেতা। উত্তরে শ্রেয়া সিংহ নামে বিক্রমের এক অনুরাগী গ্রুপে পোস্ট করেন, ‘‘বিক্রম প্রভাবশালী। তবে তাঁর প্রভাব শুধু অনুগামীদের মনে। আদালতে সেটা প্রমাণ হবে।’’