বাস্তুহারা: সেই পোড়া বস্তি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
বস্তির আগুন নিভে গেলেও ক্ষোভের আগুন এখনও জ্বলছে নোনাডাঙার সেই বস্তিতে।
মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ ইএম বাইপাস সংলগ্ন আনন্দপুর থানা এলাকার নোনাডাঙা বস্তিতে আগুন লাগে। প্রথমে একটি ঝুপড়িতে আগুন লাগলেও ঘনবসতি হওয়ায় দ্রুত সেই আগুন চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে ভস্মীভূত হয়ে যায় পরপর ২২টি ঝুপড়ি। সর্বস্ব হারিয়ে এখন ক্ষোভে ফুঁসছেন ওই বস্তির বাসিন্দারা। সত্যিই কোনও দুর্ঘটনা থেকে ওই আগুন লেগেছে, না পরিকল্পিত ভাবে তা লাগানো হয়েছে, তা নিয়েই এখন সন্দেহ বাড়ছে সেখানে। যদিও পুর-কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে কলকাতার মেয়র তথা দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অগ্নিকাণ্ডের জেরে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে তাতে যে কিছু দিন সময় লাগবে, পুরসভার পক্ষ থেকে তা-ও ঝুপড়িবাসীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সেই পুনর্বাসন কবে মেলে, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন অগ্নিকাণ্ডের দুর্গতরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বস্তি বহু দিনের পুরনো। কিছু দিন আগে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে কলকাতা পুরসভা। তার জন্য বেশ কয়েকটি ঝুপড়ি সরানো দরকার ছিল। পুরসভার পক্ষ থেকে ওই সব ঝুপড়ির বাসিন্দাদের কাছে সরে যাওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছিল। ঝুপড়িবাসীরা তাতে রাজি না হওয়ায় সেই কাজ সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেয় পুরসভা। এখন বস্তিবাসীদের অভিযোগ, তাঁদের যেতে রাজি না হওয়ার সঙ্গে এই অগ্নিকাণ্ডের কোনও যোগ থাকতে পারে। চক্রান্তের অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।
পুড়ে যাওয়া একটি ঝুপড়ির বাসিন্দা মাধুরীদেবী বলেন, ‘‘যে ঘরে আগুন লাগার কথা বলা হচ্ছে, কাল তো সেখানে কেউ ছিলই না। রান্না কে করবে? হঠাৎ শুনলাম, আগুন লেগেছে।’’ চক্রান্তের কথা শুনেই মেয়র শোভনবাবু এ দিন বলেন, তাঁর কাছে এমন কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে পুরো বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
অগ্নিকাণ্ডের পরে আশ্রয়হীন বস্তিবাসীদের জন্য পুর-কর্তৃপক্ষ কি কিছু ভাবছেন? স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ জানান, নোনাডাঙা বস্তির দুর্গতদের জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।