কিছুকাল যাবৎই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছিল। তাদের সুপারিশ রাজ্য সরকার মানবে কি না, পরের কথা। অভিযোগ, গুরুতর বিষয় নিয়ে নিজের মতো অনুসন্ধান চালিয়ে সুপারিশই করত না কমিশন। তবে শনিবার, ৬৮তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে কমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানের মঞ্চে এক মহিলা-সহ পাঁচ জন হাজির হয়ে জানালেন, কমিশনের দৌলতেই তাঁরা সরকারি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।
এ দিন টাউন হলে ওই অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা আগে হয়েছে বলে মনে করতে পারছে না কমিশনের একাংশ। আবার কমিশনের এই অনুষ্ঠানে কোনও মন্ত্রীর হাজির থাকার নজির না থাকলেও এ দিন উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী
পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থবাবুর বক্তব্য, আগে এই কমিশনকে শ্বেত হস্তী মনে হতো। অনেক ক্ষেত্রে কমিশন নিজের মতো সুপারিশ করলেও সরকার কার্যকর করত না, ফেলে রাখত। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘এখন মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঘটনা দেখলে কমিশন পদক্ষেপ করছে। মানবাধিকার কমিশন মানবিক হয়ে উঠেছে।’’
কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাপরাজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অন্য রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন গত বছর জানিয়েছিল, তাদের পর্যাপ্ত কর্মী ও তহবিল নেই। আমাদের সেই সমস্যা নেই। এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, বিশেষত মুখ্যমন্ত্রী সাহায্য করেছেন।’’ গোটা পৃথিবীর মানুষের অধিকারের জন্য সোচ্চার হওয়ার কথা এই মানবাধিকার দিবসে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুকেও। নিজেদের কাজের মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষকে সকলের প্রতি মানবিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন যাদবপুরের শেফালি পৈলান, বেহালার অসিতকুমার দত্ত, বর্ধমানের দীপঙ্কর দে, পূর্ব মেদিনীপুরের মতিউর রহমান ও বীরভূমের অনাথ রায় কমিশনের সুপারিশে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা জানান। এঁদের মধ্যে অসিতবাবুর অভিযোগ ছিল মায়ের পেনশন সংক্রান্ত। বাকিদের পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে। এঁরা ২০, ২৫ বা ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলে জানান।
নাপরাজিতবাবু জানান, এ বার থেকে প্রত্যম্ত এলাকার লোকজনকে আর সল্টলেকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের অফিসে না এলেও হবে। জেলা শাসকের দফতরে ‘কমপ্লেন বক্স’-এ অভিযোগ জমা দিলে সেটা কমিশন পেয়ে যাবে।