কন্যা ভ্রূণ বাঁচাতে প্রচারে স্বাস্থ্য দফতর

হরিয়ানার বিবিপুরে মহিলা এবং পুরুষের অনুপাতে বৈপরিত্য অনেক। সেখানে মহিলার সংখ্যা হাতে গোনা। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতাদের প্রচারের সময়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জল কিংবা আলোর দাবি করেন না। দাবি করেন, বৌ এনে দিতে হবে। গ্রামে যে মেয়ের বড় অভাব।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ১৩:২৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র

কলকাতা যেন বিবিপুর না হয়। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

হরিয়ানার বিবিপুরে মহিলা এবং পুরুষের অনুপাতে বৈপরিত্য অনেক। সেখানে মহিলার সংখ্যা হাতে গোনা। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতাদের প্রচারের সময়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জল কিংবা আলোর দাবি করেন না। দাবি করেন, বৌ এনে দিতে হবে। গ্রামে যে মেয়ের বড় অভাব।

পরিসংখ্যান বলছে, এই অশনি সঙ্কেত দেখা দিচ্ছে কলকাতাতেও। এ রাজ্যে হাজার পুরুষ পিছু মহিলা রয়েছেন ৯৫০ জন। রাজ্যের সমস্ত জেলার মধ্যে মেয়েদের অনুপাত কলকাতায় সবচেয়ে কম। হাজার পুরুষ পিছু মহিলার সংখ্যা ৯৩৩। কন্যা ভ্রূণ হত্যার ঘটনাও কলকাতায় সবচেয়ে বেশি। সেই পরিসংখ্যানই বলছে, এ রাজ্যে মহিলা-পুরুষের অনুপাত সবচেয়ে ভাল মুর্শিদাবাদ জেলায়।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে মোট ২৪৯৬টি ইউএসজি সেন্টার রয়েছে। যেখানে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করার অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে ৫০৪টি সেন্টারই রয়েছে কলকাতায়। তালিকায় এর পরের নাম দার্জিলিং। যেখানে প্রায় শ’খানেক এ ধরনের ইউএসজি সেন্টার রয়েছে।

এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে স্বাস্থ্য দফতর নতুন ভাবে উদ্যোগী হয়েছে। প্রকল্পের নাম ‘সেভ দ্য গার্ল চাইল্ড’। ইউএসজি সেন্টারগুলিতে কোনও বেআইনি কাজ চলছে কিনা, সেটারের উপরে কড়া নজরদারির পাশাপাশি স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের জন্য সচেতনতা কর্মসূচিও নেওয়া হচ্ছে।

লিঙ্গ নির্ধারণ কী, কেন তা অবৈধ এবং মেয়েদের সংখ্যা কমে গেলে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হতে পারে— ইতিমধ্যে কলকাতার আশপাশের স্কুলগুলিতে সেই সব বোঝানো হচ্ছে বলে জানান এক স্বাস্থ্যকর্তা। শুধু এক তরফা বোঝানো নয়। এই প্রজন্ম এই সামাজিক বিষয়গুলি নিয়ে কী ভাবছে, তা-ও জানার চেষ্টা চালছে। এ নিয়ে তৈরি হওয়া তথ্যচিত্র, চলচ্চিত্র দেখানো হচ্ছে। পড়ুয়া এব‌ং প্রশাসনিক কর্তা, এই দু’তরফের আলোচনার মাধ্যমে এই কর্মসূচি চলছে। বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। শুধু ছাত্রীদের নয়, ছাত্রদেরও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। কন্যা সন্তানে অনীহা শুধু গ্রাম কিংবা শহর বলে নয়। এমন মানসিকতা সর্বত্রই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালে প্রতি সাড়ে ছ’জন পুরুষ পিছু এক জন করে মহিলা থাকবেন। যা কোনও দিনই সুস্থ সমাজ তৈরি করতে পারে না।

অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা অদিতিকিশোর সরকার বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মকে সচেতন করতে পারলে ভবিষ্যতের বিপদকে এড়ানো যাবে। আজকের স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা ভবিষ্যতে বাবা-মা হবে। এই বয়স থেকে সামাজিক বিষয়গুলি নিয়ে সচেতন হলে ভবিষ্যত সুন্দর হবে। সেই আশাতেই এই উদ্যোগ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন