সরকারি হোমগুলির দুরবস্থা নিয়ে আকছার নানা অভিযোগ ওঠে। এ বার আশ্রয়হীন শিশুদের জন্য হোম-এর চেয়ে উন্নত কোনও বিকল্প খোঁজার উপরে জোর দিলেন খোদ রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী। তিনি জানালেন, হোম-এর মতো প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে শিশুকে পারিবারিক পরিবেশে রেখে কী ভাবে বড় করা যায়, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। দত্তকের ব্যবস্থা তো আগে থেকেই রয়েছে, পাশাপাশি ‘ফস্টারিং’ অর্থাৎ কোনও পরিবারে শিশুর প্রতিপালনের ব্যবস্থা এবং যে সব দরিদ্র পরিবারে শিশুর ভরণপোষণের খরচ চালানো মুশকিল, সেখানে শিশুর ‘স্পনসরশিপ’-এর বিকল্পের কথাও ভাবা হয়েছে।
রাজ্যে শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত করতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জুরিডিকাল সায়েন্সেস এ বার ইউনিসেফ-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি শিশু অধিকার কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে কী ভাবে অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ চালানো যায়, সে ব্যাপারে ভবিষ্যতে চেষ্টা চালাবে ওই কেন্দ্র।
শনিবার ওই কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে এসে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘হোম কখনওই কোনও শিশুর কাছে যথার্থ আশ্রয় নয়। শিশুকে যথাযথ ভাবে বড় করে তুলতে অন্য ধরনের বিকল্প আশ্রয়ের কথা ভাবতে হবে। যদি নিজের পরিবারে শিশুটির থাকা একেবারেই সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে দত্তকের প্রক্রিয়া অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু যদি শিশুর বাবা-মা সাময়িক ভাবে অন্য কোথাও থাকতে বাধ্য হন, তা হলে অন্যত্র সেই শিশুর প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুর ভরণপোষণের খরচ জোগাতে না পেরে নিজের বাবা-মা তাকে বিক্রি করে দিচ্ছেন, এমন ঘটনাও কানে আসছে। এ ক্ষেত্রে নিজের পরিবারেই শিশুর থাকার জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’’
ইউনিসেফ-এর কর্তারা জানান, এ রাজ্যে এখনও চালু না হলেও অন্য একাধিক রাজ্যে ‘ফস্টারিং’-এর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ঠিক মতো তাকে প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য নজরদারিটা সবচেয়ে জরুরি।
এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর, হাইকোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস কমিটির চেয়ারপার্সন নাদিরা পাথেরিয়া প্রমুখ। হোম-এর পরিবেশের উন্নতি ও কর্মীদের সংবেদনশীলতা বাড়ানোর উপরে জোর দেন সকলেই।