হিন্দ সিনেমার সামনে ছবিটি তুলেছেন সুদীপ্ত ভৌমিক।
খড়্গপুর-সহ গোটা রাজ্যে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’-এর দাবিতে বুধবার পথে নামল কংগ্রেস। এ দিন সকালে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখায় তারা। খড়্গপুর-কাণ্ডে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে কংগ্রেস। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি সমৃদ্ধ চক্রবর্তী প্রশাসনকে ওই পুরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হাজরা মোড়ের কাছে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। পথ অবরোধও করা হয়। মিনিট দশেক পর সেই অবরোধ উঠে গেলেও তত ক্ষণে ওই এলাকায় যানজট তৈরি হয়। প্রায় একই সময় মধ্য কলকাতার হিন্দ সিনেমার কাছে পথ অবরোধ করা হয়। সেখানেও মিনিট দশেক অবরোধ চলে। দক্ষিণ কলকাতার পাহাড়পুর রোড এবং গার্ডেনরিচ রোডের সংযোগস্থলে কাচ্চি সড়কেও অবরোধ হয়। আধ ঘণ্টা পর যদিও তা উঠে যায়। হাওড়া ব্রিজের কাছে মহাত্মা গাঁধী রোড এবং স্ট্যান্ড রোডের সংযোগস্থলে মিনিট পাঁচেকের অবরোধে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যান চলাচল।
কংগ্রেসের অভিযোগ, খড়্গপুর পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ ছয় কংগ্রেস কাউন্সিলরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলবদলের জন্য তাঁদের হুমকিও দিচ্ছে শাসকদল। এই অবস্থায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। এ দিন সেই মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই পুরসভায় বোর্ড গঠন। ওই দিন মামলাকারী কাউন্সিলররা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে যেতে পৌঁছতে পারেন সে বিষয়টিও পুলিশকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এমনকী, কোনও কাউন্সিলর যদি পুলিশের কাছে কোনও অনুরোধ বা অভিযোগ করেন তবে তা সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।
এ দিন কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, খড়্গপুরে বিরোধীরা মিলে একটা রামধমু জোট গড়বে। কিন্তু, পুলিশ-প্রশাসন-দুষ্কৃতী মিলিয়ে যে অমাবস্যার জোট তৈরি হয়েছে, তার অন্ধকারে গোটা রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন। তার প্রতিবাদে আমরা পথে নেমেছি। মানুষও তাতে সাড়া দিচ্ছে।’’
এত কিছুর পরেও খড়্গপুরে বৃহস্পতিবার বোর্ড গড়ার সম্ভাবনা তৃণমূলেরই। কেন না, এ দিন ওই পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেতা সিপিআই কাউন্সিলর শর্মিষ্ঠা সিংহ মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়ে দলবদলের কথা জানিয়েছেন। কাজেই, বাম-বিজেপি ভাঙিয়ে এই মুহূর্তে তৃণমূলের সঙ্গে ১৮ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। ৩৫ আসনের পুরসভায় তৃণমূল ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যেই।