ফের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে।
ফের অভিযুক্ত সেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)।
ফের সমস্যা মেটাতে আসরে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।
তবে এ ক্ষেত্রে এক টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ওই সংগঠনেরই অন্য এক নেতা।
অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁটাকল (বিটি রোড) ক্যাম্পাসের হস্টেলে ভাঙচুর, মারধর করে এক দল ছাত্র। সেই দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, টিএমসিপি-র কুণাল সামন্ত। ওই হস্টেলে কাঁটাকল ছাড়াও রাজাবাজার, কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীরা থাকেন। কুণাল নিজে অবশ্য ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, সেখানকার আবাসিকদের মধ্যেই গোলমাল হয়েছে। সেখানে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই।
হস্টেলে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার বেলা ৩টে থেকে ঘণ্টা চারেক বিজ্ঞান কলেজ ক্যাম্পাসে বিজ্ঞান-সচিব অমিত রায়ের ঘরের সামনে অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল ছাত্রছাত্রী। উপাচার্য ওই ঘটনার তদন্তে এক সদস্যের কমিটি গড়েন। ওই হস্টেলে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষীও মোতায়েন করা হয়। সব পক্ষকে ডেকে মধ্যস্থতা করে শেষ পর্যন্ত অবস্থান তোলার ব্যবস্থা করেন উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু। তবে এই ঘটনার সূত্র ধরে ফের সামনে চলে এসেছে টিএমসিপি-র গোষ্ঠী-কোন্দল।
টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র অবশ্য দাবি করেছেন, ওই ঘটনায় তাঁদের সংগঠনের কেউ জড়িত নন। কিন্তু ওই সংগঠনেরই রাজ্য সম্পাদক সুজিত শাম মোটেই অভিযোগ উড়িয়ে দেননি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, টিএমসিপি-র কেউ হস্টেলে ভাঙচুর এবং আবাসিকদের মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকলে সব দিক খতিয়ে দেখে তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে?
কাঁটাকল হস্টেলের বাসিন্দা প্রণীত সামন্তের অভিযোগ, ওই রাতে তাঁর ঘর ভাঙচুর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কুণাল সামন্ত এবং তাঁর দলবল। তিনি তখন হস্টেলে ছিলেন না। খবর পেয়ে হস্টেলে পৌঁছে দেখেন, ঘর লন্ডভন্ড। তাঁর ল্যাপটপ ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওই ছাত্রের। অভিযোগ, ওই দিন রাতে মারধরও করা হয় আবাসিকদের। একই কথা জানান, রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজের এক টিএমসিপি নেতা।
গত জুলাইয়ে এই নেতার বিরুদ্ধেই ক্লাসে ঢুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক সপ্তাহ ক্লাস বয়কট করেন শারীরবিদ্যা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরাও নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলেন। সুরঞ্জনবাবু নিজে ক্যাম্পাসে হাজির হয়ে এবং মধ্যস্থতা করে তখনকার মতো সেই জট কাটান। বুধবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেও তাঁকেই আসরে নামতে হয়েছে।
এ দিন বিকেলে আন্দোলনকারী দুই ছাত্রকে ডেকে পাঠান সুরঞ্জনবাবু। ডাকা হয় অভিযুক্তদেরও। আসেন ওই হস্টেলের সুপার। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ভবিষ্যতে আর কোনও রকম গোলমাল না-করার পরামর্শ দেন উপাচার্য। রাজাবাজারে ফিরে ওই ছাত্র-প্রতিনিধিরা অবস্থান তুলে নেন।