২০১৪-র অক্টোবরের পরে ফের গণভোট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে এ বারে আর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে নয়, ছাত্রভোটের জন্য গণভোটের পথে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বৃহস্পতি ও শুক্রবার, এই দু’দিন ক্যাম্পাসে ওই ভোটপর্ব চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, দু’বছর আগে অক্টোবরে গণভোট হয়েছিল তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর অপসারণের দাবিতে। কিন্তু এ বার কার্যত তাঁরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে গণভোটের পথে নামলেন। গত বছরের অক্টোবরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছিলেন, জানুয়ারিতে হওয়া ছাত্র ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে। তখন থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। অবশেষে গত নভেম্বরে উচ্চশিক্ষা দফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যে ছাত্র ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তারপরে রাজ্যের অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎপরতা দেখা না গেলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে নির্ধারিত সময়েই ভোট করানোর দাবি জানায়। কিন্তু হঠাৎই জানুয়ারি মাসের কর্মসমিতির বৈঠকের সময়ে এসএফআই-এর তরফে কর্তৃপক্ষের কাছে ভোটের দাবি জানানো হয়।
সে সময়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, শিক্ষা দফতরে চিঠি লিখে জানানো হবে যে তাঁরা ভোটের পক্ষে এবং নিয়ম মেনে নির্ধারিত সময়েই ভোট করাতে ইচ্ছুক। যদিও ওই চিঠি দফতরে পৌঁছনোর আগেই উচ্চশিক্ষা দফতর ফের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। তার পরে বিশেষ কর্মসমিতির বৈঠক বসার পরে সমস্ত পড়ুয়া অবস্থানে বসে পড়েন। ঘেরাও হয়ে পড়েন উপাচার্য। ৫০ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের আশ্বাসে ঘেরাও উঠে যায়। কিন্তু রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকও কার্যত নিস্ফলা থেকে যায়। কারণ, রাজ্যপাল তাঁদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি, আদালতে যেতে পারেন বলেও মত দেন রাজ্যপাল। এর পরেও কোনও আশার আলো না দেখে গণভোটের পথে পড়ুয়ারা।
ব্যালট পেপারে দু’টি বিষয়ের উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, পড়ুয়ারা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভোটের পক্ষে কি না। দ্বিতীয়ত, শিক্ষা দফতর স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করছে কি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে, এই ভাবে আদৌ কোনও আন্দোলনের ফল পাওয়া যাবে কি না। কারণ, বিষয়টি শুধু যাদবপুরে নয়, রাজ্যের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের। যাদবপুরের পড়ুয়ারা আর কোনও প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের এক সারিতে আনতে পারেননি। অন্য দিকে, ভোটের ফলাফল পড়ুয়াদের পক্ষে যাবে বলেই মত অধিকাংশের। সে ক্ষেত্রে ওই ফল প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে আদৌ সরকারকে টলাতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান খোদ আন্দোলনকারীরাই।