JU Student Death

যাদবপুরে কোথায় বসবে সিসি ক্যামেরা, লিখিত ভাবে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে, দাবি ছাত্র সংগঠনের

ছাত্রদের দাবি, সিসি টিভির ফুটেজে কারা নজরদারি চালাবেন, তা-ও জানাতে হবে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানান, সব পক্ষের লিখিত মতামত পড়ার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন উপাচার্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৯
Share:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে আপত্তি নেই। তবে কোথায় সেই ক্যামেরা বসানো হবে, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে পড়ুয়াদের জানাতে হবে। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্টেক হোল্ডার’ (অংশীদার)-দের বৈঠকের পর এই দাবিই তুললেন পড়ুয়ারা। তাঁদের আরও দাবি, সিসি টিভির ফুটেজে কারা নজরদারি চালাবেন, তা-ও জানাতে হবে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানান, সব পক্ষের লিখিত মতামত পড়ার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন উপাচার্য।

Advertisement

৯ অগস্ট যাদবরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে যায় প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে র‌্যাগিংয়ের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় এবং হস্টেলে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। এ নিয়ে শুক্রবার ‘অংশীদার’দের নিয়ে বৈঠকে বসেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে ছাত্র, শিক্ষক সংগঠন, গবেষক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা নিয়ে ইউজিসির যে নির্দেশিকা, তা সকলেই মানতে চায়। কোনও বাধা নেই। কোথায় বসবে সিসি ক্যামেরা, তা নিয়ে ছাত্রদের কিছু প্রশ্ন রয়েছে।’’

কী প্রশ্ন রয়েছে, তা-ও জানিয়েছেন স্নেহমঞ্জু। তাঁর কথায়, ‘‘সকলেই বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাগিংমুক্ত করতে চান। ইউজিসির নির্দেশিকা মানতে যা দরকার, করা হবে। ছাত্রদের প্রশ্ন, সিসিটিভির ফুটেজে কারা নজরদারি চালাবেন, কোথায় বসবে, সে বিষয়ে যেন তাদেরও জানানো হয়। একক ভাবে সিদ্ধান্ত না নিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যেন সিদ্ধান্ত যেন নেওয়া হয়, যেমন আগে হয়েছে।’’ রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, বৈঠকে সকলেই মতামত দিয়েছেন। লিখিত ভাবে পরামর্শ দিয়েছেন। উপাচার্যের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ ছিল, যার যেটা বক্তব্য, সেটা যেন সাক্ষর করে জমা দেওয়া হয়। উপাচার্য দু’-তিন দিন ধরে সেই মতামত পড়বেন। তার পর নিজের বক্তব্য জানাবেন। প্রশ্ন উঠেছে, এ সব কারণে কি সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়টি পিছিয়ে যাচ্ছে? এই প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, বলার সঙ্গে সঙ্গে সিসি ক্যামেরা বসানো সম্ভব নয়। কিছু সময় লাগবে। তাঁর কথায়, ‘‘একটি সংস্থাকে বলেছিলাম। তারা বলেছে দরপত্র হেঁকেছে। তার পর অন্তত ১৫ দিন সময় লাগে। এর মধ্যে উপাচার্য স্যর সকলের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করবেন কোথায় বসবে।’’

Advertisement

বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই নেতা অনুষ্টুপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে তাঁদের কোনও দিনই আপত্তি ছিল না। তবে কোথায় বসছে, তা জানাতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা নিয়ে বিরোধিতার জায়গা নেই। করিওনি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জেনেছি, সিসি ক্যামেরা স্ট্যাটেজিক লোকেশনে বসবে। এটা বলতে কী বোঝানো হচ্ছে, তা লিখিত আকারে জানানো হোক। প্রবেশ, প্রস্থান পথে বসানো হলে বিরোধিতার জায়গা নেই।’’ পাশাপাশি তাঁদের দাবি, সিসি ক্যামেরার বসানোর সঙ্গেই ব্যবহার করা হোক ‘আলাপ’ অ্যাপ। সিসি ক্যামেরা বসানোর থেকে এই অ্যাপের ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকরী। এই অ্যাপের মাধ্যমে র‌্যাগিংয়ের পাশাপাশি সব রকম হেনস্থাও রোখা যাবে।

তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতা সঞ্জীব প্রামাণিক আবার এই বৈঠককে ‘অবৈধ’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘২৪ দফা দাবি নিয়ে গেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্র্যাটু মেনে কাজ হচ্ছে না। প্রথম যে বৈঠক হয়েছে, তা অবৈধ। আজ যে স্টেকহোল্ডারের বৈঠক হয়েছে, তা অবৈধ। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্র্যাটুতে স্টেকহোল্ডারের বিষয়ে কিছু লেখা নেই।’’ পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের মোতায়েনের যে দাবি উঠেছে, তারও বিরোধিতা করেছে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ। সঞ্জীব বলেন, ‘‘আমরা বিরোধিতা করছি। এটা রাজ্যপাল, বিজেপির চাল। যাদবপুরকে বিশ্বভারতী করছে।’’

রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুও জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কাজে প্রাক্তন সেনাকর্মী মোতায়েনের বিষয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন