ট্রেনে যাত্রীর মৃত্যু, অভিযুক্ত কর্মীরা

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ওই যাত্রীর নাম সতেন্দ্র সিংহ (৫২)। বাড়ি নারকেলডাঙা থানা এলাকার ষষ্ঠিতলা লেনে

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

চলন্ত ট্রেনে এক যাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানী এক্সপ্রেসের কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর’ অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ, ওই যাত্রী ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জেনেও রেলকর্মীরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি। সেই সূত্রে রাজধানী এক্সপ্রেসের কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর’ অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ওই যাত্রীর নাম সতেন্দ্র সিংহ (৫২)। বাড়ি নারকেলডাঙা থানা এলাকার ষষ্ঠিতলা লেনে। গত ৮ জানুয়ারি শিয়ালদহ স্টেশনে ডাউন রাজধানী এক্সপ্রেসের এ-ওয়ান কামরায় তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন রেলের বিআর সিংহ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। মৃত্যুর প্রায় তিন সপ্তাহ পরে সতেন্দ্রর স্ত্রী সোনম সিংহের তরফে পুলিশের কাছে রেল কর্মীদের বিরুদ্ধে আভিযোগ জমা দেওয়া হয়। সেই ভিত্তিতে গত শুক্রবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (এ) ধারায় অর্থাৎ ‘অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর’ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে শিয়ালদহ জিআরপি। পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই ট্রেনের বেশ কয়েক জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই যাত্রীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ৬ জানুয়ারি দিল্লি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস ধরে পরের দিন শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ছিল সত্যেন্দ্র সিংহের। তাঁর স্ত্রী সোনম সিংহের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের বদলে অনেক দেরিতে ট্রেন ছাড়ে নিউ দিল্লি থেকে। তখন তাঁর স্বামী সুস্থ ছিলেন। মাঝপথে তিনি অসুস্থ বোধ করলে তা রাজধানী এক্সপ্রেসের কর্তব্যরত কর্মীদের জানান। কিন্তু তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। পাশাপাশি তাঁর দাবি, ট্রেনটি প্রায় ২৪ ঘণ্টা দেরিতে চলছিল। ফলে তাঁর স্বামী আরও অসুস্থ হয়ে পড়লেও কর্মীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেননি।

Advertisement

পেশায় রেলের ঠিকাদার সতেন্দ্র বাবু ব্যবসার কাজে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দিল্লি যান। কাজ শেষ করে রাজধানী এক্সপ্রেস ধরেন তিনি। রাজধানীর মতো ট্রেনে যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে কেন চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে না, এই প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের স্ত্রী। অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পেয়েও মৃতের পরিবারকে কেন জানানো হল না, সে প্রশ্নও তুলেছে পরিবার। শিয়ালদহে পৌঁছনোর পরে মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় বলে অভিযোগ করেন সোনম।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ডানকুনি ছাড়ার পরে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন সতেন্দ্র সিংহ। তা শুনে ওই কোচের কর্তব্যরত কর্মী শিয়ালদহ স্টেশনে চিকিৎসার জন্য আবেদন করেন। ট্রেনটি শিয়ালদহ প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর সময় সেখানে রেলের হাসপাতালের চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরাই সতেন্দ্র সিংহকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তকারীদের দাবি, ওই কোচের অন্য কর্মীদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। সঙ্গে রেলের কাছে সতেন্দ্রবাবুর সহযাত্রীদের নামের তালিকাও চাওয়া হয়েছে। রেল পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে ধরে নিলেও কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

এই ঘটনা নিয়ে পূর্ব রেলের মূখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের সঙ্গে ফোন এবং এসএমএস-এ যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন