সিপি-র বাহবা বাহিনীকে, প্রশ্ন

ভোটের পরেই কলকাতা পুলিশকে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সেই সুরেই নিজের বাহিনীকে বাহবা দিলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থও। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, পুরভোটের দিনে কাজের জন্য বাহিনীকে বাহবা দিলেও সে দিন গিরিশ পার্কে এস আইয়ের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা কার্যত উল্লেখই করেননি তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০২
Share:

ভোটের পরেই কলকাতা পুলিশকে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সেই সুরেই নিজের বাহিনীকে বাহবা দিলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থও। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, পুরভোটের দিনে কাজের জন্য বাহিনীকে বাহবা দিলেও সে দিন গিরিশ পার্কে এস আইয়ের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা কার্যত উল্লেখই করেননি তিনি। বাহিনীর অনেকেই এতে ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, বহু ক্ষেত্রেই গোলমাল হলেও সে ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশকে ঠুঁটো করেও রাখা হয়েছিল। উর্দি পরে এমন কাজ করার পরেও বাহবা প্রাপ্য কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে লালবাজারের অন্দরে।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে খবর, সোমবার পুলিশ কমিশনারের (সিপি) মাসিক ‘ক্রাইম’ বৈঠক ছিল। একাধিক অফিসারের দাবি, সেখানে জগন্নাথ মণ্ডলের গুলিবিদ্ধ হওয়াকে গোলমালের ঘটনা বলে এড়িয়ে যান তিনি। পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের মতে, সিপি-র এই আচরণ এমন কিছু অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ, ভোটের দিনই তিনি দাবি করেছিলেন, বাহিনী পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করেছে। মুখ্যমন্ত্রীও প্রশংসা করেছেন। এক অফিসার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে সিপি বাহিনীকে বাহবা দেবেন, এটাই তো স্বাভাবিক।’’

সিপি বাহবা দিলেও অন্য কথা বলছে পুলিশেরই তথ্য। লালবাজারের একাধিক সূত্র বলছে, পুরভোটের দিন অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল কলকাতার তিন জায়গায় গুলি চালানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভোট চলাকালীন প্রায় ৬টি জায়গায় ব্যাপক বোমাবাজির অভিযোগও দায়ের করে বিরোধীরা। তা যে মিথ্যে নয়, পুলিশের একাধিক কর্তা মানছেন। পুলিশের একাংশ জানায়, ওই দিন লালবাজারে প্রায় ৩০টির বেশি সন্ত্রাসের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।

Advertisement

বাহিনীর একাংশ ক্ষুব্ধ এ দিনের বৈঠকে পুলিশের গুলি খাওয়ার কথা না ওঠাতেও। গিরিশ পার্কের ঘটনায় দুই তৃণমূলকর্মী-সহ ৬ জন গ্রেফতার হয়। মূল চক্রী গোপাল তিওয়ারি ও তার দলের সঙ্গে শাসক দলের অনেক নেতার ঘনিষ্ঠতার কথাও উঠে এসেছে। এ দিন বৈঠক থেকে বেরোনোর পরে অফিসারদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, শাসক দলকে বিব্রত না করতেই কি গিরিশ পার্ক কাণ্ড এড়িয়ে যাওয়া হল? লালবাজারের শীর্ষকর্তাদের একটি সূত্র বলছে, মার্চের অপরাধদমন নিয়ে আলোচনাই ছিল বৈঠকের মূল বিষয়। শুরুতে মুখবন্ধ হিসেবে সিপি ওই বাহবার কথা জানান। যদিও লালবাজারের অনেকেরই মত, মুখবন্ধে প্রবীণ অফিসারের গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গ এক বার তোলাই যেত।

লালবাজারের একাংশ বলছেন, আজ, মঙ্গলবার শহরের ১২টি জায়গায় পুরভোটের গণনা হবে। গণনা ও পরবর্তী সময়ে গোলমাল ঠেকাতে বাহিনীকে সক্রিয় হতেও নির্দেশ দিয়েছেন সিপি।

কিন্তু সেই সক্রিয়তাও পুরভোটের মতো হবে না তো? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে খাস লালবাজারের অন্দরেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন