জল বাতাসা হাতে খর দুপুরের বন্ধু

স্কুটারের পিছনে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাখা আছে জলের ছোট ছোট বোতল। আর তা নিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বৃদ্ধ। তপ্ত দুপুরে রাস্তার যেখানেই পুলিশকর্মীদের ডিউটি করতে দেখছেন, সেখানেই থেমে যাচ্ছে তাঁর স্কুটার। গরমে ক্লান্ত পুলিশকর্মীদের দিকে এগিয়ে দিচ্ছেন জলের বোতল। সঙ্গে বাতাসা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০১:৫৯
Share:

জলদান: ট্র্যাফিক পুলিশের পাশে সুরেশ জিন্দল। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

এ যেন ভ্রাম্যমাণ জলসত্র।

Advertisement

স্কুটারের পিছনে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাখা আছে জলের ছোট ছোট বোতল। আর তা নিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বৃদ্ধ। তপ্ত দুপুরে রাস্তার যেখানেই পুলিশকর্মীদের ডিউটি করতে দেখছেন, সেখানেই থেমে যাচ্ছে তাঁর স্কুটার। গরমে ক্লান্ত পুলিশকর্মীদের দিকে এগিয়ে দিচ্ছেন জলের বোতল। সঙ্গে বাতাসা। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের পাশে এ ভাবেই দাঁড়াচ্ছেন হাওড়ার ওই বৃদ্ধ।

তাঁর নাম সুরেশ জিন্দল। হাওড়ার গোলাবাড়ি বাসিন্দা সুরেশবাবু লোহার ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রের খবর, গত পনেরো দিন ধরে রোজ দুশোটি দুশো মিলিলিটারের জলের বোতল নিয়ে কলকাতার রাস্তায় ঘুরছেন। ট্র্যাফিক পুলিশের পাশাপাশি নিয়ম করে পথচারীকেও জল খাওয়াচ্ছেন তিনি।

Advertisement

সুরেশবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গোলাবাড়ি থেকে শুরু করে বড়বাজার, হাওড়া ব্রিজ, ডালহৌসি, পার্ক স্ট্রিট-সহ ময়দান এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের কাছে জল পৌঁছে দিয়েছেন। অসহ্য গরম যতদিন চলবে ততদিন তিনি ওই ‘ক্ষুদ্র প্রয়াস’ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশের একটি অংশের দাবি, প্রায় চল্লিশ লিটার জল নিয়ে রোজ রাস্তায় নামেন সুরেশবাবু।

এ ভাবে পুলিশকর্মীদের পাশে থাকার চিন্তা এল কী করে? সুরেশবাবু জানান, তিনি যাতায়াতের সময় দেখেছেন রোদে-গরমে ডিউটি করেন পুলিশকর্মীরা। কেউ তাঁদের দিকে জল তো দূর অস্ত্‌, একটু সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দেন না। তাই তাঁদের কষ্ট লাঘব করতে জল নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান তিনি। সম্প্রতি পার্ক স্ট্রিট এলাকায় তাঁকে নিজের হাতে পুলিশকর্মীদের জল খাওয়াতে দেখা যায়। এক পুলিশকর্মী জানান, লালবাজারের কর্তারা গরমে পাশে থাকলেও সাধারণ মানুষ থাকেন না। ‘জিন্দলবাবু’ ব্যতিক্রম বলে তাঁর দাবি।

অন্য দিকে লালবাজার সূত্রে খবর, মাত্রাছাড়া গরমে কলকাতার ট্রাফিক পুলিশের ডিউটির সময় কমানোর ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে কাউকে টানা ডিউটি না করানোরও নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। গরমের হাত থেকে বাঁচতে পুলিশকর্মীদের সানগ্লাস ও নেক কুলার ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। গরম এড়াতে ট্রাফিক পুলিশের ক্রসবেল্ট ব্যবহারও আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুলিশকর্মীদের গ্লুকোজ, ছাতা এবং ওআরএস বিলি করেছেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন