যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রৌনক সাহার গঙ্গায় ডুবে মৃত্যুর পরে নিরাপত্তা নিয়ে টনক নড়ল প্রশাসনের। গঙ্গায় বিপদ ঠেকাতে কী কী করা হবে, তার এক গুচ্ছ পরিকল্পনা করা হয়েছে। লালবাজারের খবর, গঙ্গার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের বন্দর বিভাগের অফিসারেরা সেই প্রস্তাব ডিসি-র (কমব্যাট) কাছে পাঠিয়েছেন। তিনিই এই পরিকল্পনায় সিলমোহর বসাবেন।
পুলিশ জানায়, এ বার থেকে বাবুঘাটের কাছে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসে ২৪ ঘণ্টাই বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানেরা মোতায়েন থাকবেন। প্রতি শিফ্টে অন্তত দশ জন থাকবেন। রিভার ট্র্যাফিক জেটিতে নজর মিনারও তৈরি হবে। সেখানে দিনরাত এক জন পুলিশকর্মী দূরবীন চোখে নজরদারি চালাবেন। কিছু ঘটতে দেখলেই রিভার ট্র্যাফিকের দফতরে জানাবেন তিনি।
লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের আওতাধীন ২২ নটিক্যাল এলাকার জন্য এখন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর মাত্র পাঁচ জওয়ান রয়েছেন। তাঁরা সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত থাকেন। তার পরে কিছু ঘটলে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে আনা হয়।
পুলিশ জানায়, ২৪ নভেম্বর চার বন্ধুর সঙ্গে গঙ্গায় নৌকাবিহার করতে গিয়ে জলে তলিয়ে যান রৌনক। পরে ফেয়ারলি প্লেসের জেটির তলায় তাঁর দেহ মেলে। রৌনকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বন্ধুদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে নৌকার মাঝি। এর পরেই নৌকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বৈঠক করেছিল কলকাতা বন্দর, পুলিশ ও পরিবহণ দফতর।
লালবাজার সূত্রে খবর, প্রমোদ বিহারের নৌকোয় পাঁচ জনের বেশি যাত্রী ওঠাও নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে। প্রত্যেক যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট পড়তে হবে। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে মাঝিদের সচেতন করার কথাও বলা হয়েছে। প্রমোদ বিহারের জন্য নির্দিষ্ট চারটি ঘাট (১, ২ নম্বর পানিঘাট, ম্যান অব ওয়ার জেটি ও প্রিন্সেপ ঘাট) থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যেই প্রমোদ বিহার করতে হবে। পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘এত বড় গঙ্গায় ঘাট থেকে বহু দূরে গিয়ে বিপদে পড়লে নজরদারি ও উদ্ধার, দু’টিই কঠিন।’’ লালবাজারের খবর, গঙ্গাবক্ষে যাত্রীরা যাতে কোনও নৌকায় চেপে হুল্লোড় করতে না পারেন, সে জন্য স্পিড বোটে নজরদারি চালানো হবে।