Dengue

ডেঙ্গির দোসর সোয়াইন ফ্লু, পুজোর মুখে বাড়াচ্ছে চিন্তা

এ দিকে, ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার সদলবল এলাকার অবস্থা খতিয়ে দেখেন বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। তিনি বলেন, ‘‘মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে তাঁদের বিস্তর অভিযোগ। তা খতিয়ে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪০
Share:

স্বহস্তে: মশার আঁতুড়ঘর খুঁজতে হাত লাগিয়েছেন স্বয়ং মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। বৃহস্পতিবার, বিধাননগরের প্রফুল্ল কাননে। ছবি: শৌভিক দে

এত দিন ছিল ডেঙ্গি। এ বার তার দোসর হল সোয়াইন ফ্লু।

Advertisement

জোড়া আক্রমণে কিছুটা হলেও বেসামাল বিধাননগর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ।

পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই দু’টি মৃত্যু সম্পর্কে পাওয়া যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। যদিও তাঁদের দাবি, এই দু’টি মৃত্যুই বিক্ষিপ্ত ঘটনা।

Advertisement

তবে মুখে না বললেও তড়িঘড়ি কিছু এলাকায় পুরসভার বিশেষ অভিযান ও পরিদর্শনই বলে দিচ্ছে, একই ওয়ার্ডে ডেঙ্গি এবং সোয়াইন ফ্লু-তে মৃত্যুর ঘটনা চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে পুরসভার।

ডেঙ্গিতে এক জনের মৃত্যুর পরে ফের কেষ্টপুরেই স্মৃতি দাস (৬৪) নামে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যুর খবর আসে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই মহিলা সোয়াইন ফ্লু-তে মারা গিয়েছেন বলে খবর এসেছে। তাই পুরকর্তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

এ দিকে, ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার সদলবল এলাকার অবস্থা খতিয়ে দেখেন বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। তিনি বলেন, ‘‘মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে তাঁদের বিস্তর অভিযোগ। তা খতিয়ে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হবে।’’ তিনি জানান, পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কেষ্টপুরের প্রফুল্লকানন এলাকায় ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবরে কিছুটা অবাকই হতে হয়েছে। কারণ, ওই এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধির কোনও খবর ছিল না। আচমকাই এক সঙ্গে ডেঙ্গি এবং সোয়াইন ফ্লু-তে মৃত্যুর খবর আসে। তাঁর মতে, দু’টি ঘটনাই আপাত দৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন বলে মনে হচ্ছে। তবু তার উৎস সন্ধান করা হচ্ছে। প্রণয়বাবু জানান, সোয়াইন ফ্লু-তে মৃতার পরিবারের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা যায়নি।

এ দিন প্রফুল্লকাননে ওই মৃতার বাড়ির পিছন থেকেই প্লাস্টিকের পাত্রে মশার লার্ভা পেয়েছেন পুরকর্মীরা। তাঁরা জানান, লার্ভা যে মিলেছে, তা ঠিক। কিন্তু ওই এলাকায় সে ভাবে জ্বরের প্রকোপ দেখা যায়নি। তবে, এ ক্ষেত্রে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের একাংশের অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এনএস-১ পজিটিভকেই ডেঙ্গি বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পুরসভা সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ১৬০ জনের মতো বাসিন্দার এনএস-১ পজিটিভ ধরা পড়েছে। গত বছর এই সময়ে সাড়ে ছ’শোরও বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই হিসেবে এ বছর গ়ড়ে প্রতি ওয়ার্ডে তিন জন জ্বরে আক্রান্ত। তবে ২১ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকা চিন্তা বাড়িয়েছে। যেমন, মহিষবাথান। মূলত প্রান্তিক এলাকা। ভেড়ি, জলাশয় যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ক্যাম্প ও ঝুপড়ি এলাকা। সেখানে সচেতনতার প্রচারে কোনও লাভ হয়নি বলে কার্যত স্বীকারই করে নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। ফলে জমা জল থেকে মশার দাপট বেড়েছে এলাকায়।

মেয়র পারিষদের (স্বাস্থ্য) দাবি, কিছু দিন অন্তর ৪১টি ওয়ার্ড কয়েকটি ভাগে ভাগ করে বৈঠক করা হচ্ছে। পরবর্তী রূপরেখাও তৈরি করা হচ্ছে। সেই অনুসারে কাজও চলছে। তবে মশার দাপট যে সব জায়গায় বেড়েছে, সেখানে চলছে বিশেষ অভিযান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন