সিন্ডিকেটের হামলা আইআইএমেও

নিজেদের লোক ঢোকানো এবং মালপত্র সরবরাহের দাবিতে সিন্ডিকেট-তাণ্ডব এ বার কলকাতায় দেশের প্রথম সারির অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)-এ। অভিযোগের আঙুল এ বারেও তৃণমূলের দিকে। তবে শাসক দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তাঁদের কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০২
Share:

নিজেদের লোক ঢোকানো এবং মালপত্র সরবরাহের দাবিতে সিন্ডিকেট-তাণ্ডব এ বার কলকাতায় দেশের প্রথম সারির অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)-এ। অভিযোগের আঙুল এ বারেও তৃণমূলের দিকে। তবে শাসক দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তাঁদের কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

Advertisement

ঘটনাটি কী?

আইআইএম কলকাতা সূত্রের খবর, তাদের ক্যাম্পাসের ভিতরে রয়েছে বেশ কয়েকটি অতিথি নিবাস। এর মধ্যে ‘এগজিকিউটিভ গেস্ট হাউস’টি তৈরি হয় ২০০৭ সালে। বিশ্বমানের এই অতিথি নিবাসে দেশ-বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের রাখা হয়। ভবনটির রক্ষণাবেক্ষণ, দৈনন্দিন কাজকর্মের দায়িত্ব টেন্ডার ডেকে আউটসোর্স করা হয়েছে। দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থা এই কাজের দায়িত্ব পেয়েছে। তারা এই কাজের জন্য মোট ৮৭ জন লোক নিয়োগ করেছে। ঠিকাদার সংস্থা সূত্রের খবর, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া সহ বিভিন্ন জেলা থেকে লোক নেওয়া হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর সব লোক নিয়োগও করা হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে , গত শুক্রবার ওই অতিথি নিবাসের কর্মী নিয়োগ এবং মালপত্র সরবরাহ নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি সংস্থাটির গোলমাল শুরু হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল সিন্ডিকেটের দাবি, বাইরে থেকে লোক নিয়োগ করা চলবে না। তাঁদের কথামতো স্থানীয় তৃণমূলকর্মীদের এই কাজে নিয়োগ করতে হবে। মালপত্রও নিতে হবে তাদের সিন্ডিকেট থেকে। কিন্তু তাদের দাবি মানেননি ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্তারা।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সোমবার বিকেলে তৃণমূল নেতারা দলবল নিয়ে চড়াও হন অতিথি নিবাসে। দু’পক্ষের লোকজনের সঙ্গে গোলমাল শুরু হয়। তৃণমূল কর্মীরা ওই সংস্থার কর্মীদের কয়েক জনকে মারধর করে বলে অভিযোগ। পুলিশও জানিয়েছে, গোলমালের খবর মিলেছে। রাতে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়েছে। ডিসি (সাউথ-ওয়েস্ট) রশিদ মুনির খান জানান, “একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” আজ, মঙ্গলবার থেকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশি মোতায়েন করা হবে।

তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী এ দিন জানান, তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না। আর যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকে, তারা দলের কেউ নয়। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, হামলাকারীরা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী। শোভনবাবু রাতে বলেন, “আইএনটিটিইউসি-র তরফে ওখানে কয়েক দিন ধরে একটি আলোচনা চলছিল। তবে কেউ যদি আইন নিজেদের হাতে তুলে নেন, আমি প্রশাসনকে বলেছি তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে।”

আইআইএম কর্তৃপক্ষ বলছেন, এ দিনের গোলমালে প্রতিষ্ঠানের সরাসরি যোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠান সূত্রের খবর, অন্যান্য হস্টেল-অতিথি নিবাসে কাজের বরাত দেওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ঠিকাদার সংস্থার রফা হয়ে গেলেও এই অতিথি নিবাসের ক্ষেত্রে তা হয়নি। সেই জন্যই এ দিন হামলা চালানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন