তোলা আদায়ের অভিযোগ ঘিরে রণক্ষেত্র ট্যাংরা

পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার এক মাংস বিক্রেতা মহম্মদ সামসের আলমের সঙ্গে ট্যাংরার বাসিন্দা গোর্খা নামে এক যুবকের গোলমালের জেরেই এই ঘটনা। সামসেরের অভিযোগ, গোর্খা এলাকার সব দোকান থেকেই তোলা আদায় করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৭
Share:

এই রেললাইন থেকেই পাথর ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার, ট্যাংরায়। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা থেকে প্রায় কুড়ি ফুট উপরের রেল লাইন থেকে পাথর ছুড়ছে এক দল যুবক। সেই পাথর রাস্তা থেকে তুলে পাল্টা ছুড়ছে অন্য দল। সঙ্গে একনাগাড়ে চলছে বোতল বৃষ্টি। হুড়োহুড়ি করে তত ক্ষণে আশপাশের সব দোকানে নেমে গিয়েছে শাটার। রাস্তায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে গাড়ি চলাচল। ওই লাইনে সাময়িক ভাবে বন্ধ ট্রেনও। দোকান থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোমবার সরস্বতী পুজোর সকালে এ ভাবেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ট্যাংরার পুরনো কসাইখানা এলাকার ডি সি দে রোড। ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে গোলমালের মধ্যে পড়ে আহত হয়েছেন দুই পুলিশকর্মী।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার এক মাংস বিক্রেতা মহম্মদ সামসের আলমের সঙ্গে ট্যাংরার বাসিন্দা গোর্খা নামে এক যুবকের গোলমালের জেরেই এই ঘটনা। সামসেরের অভিযোগ, গোর্খা এলাকার সব দোকান থেকেই তোলা আদায় করেন। তাঁর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। গত রবিবার সামসেরের থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন গোর্খা। কিন্তু তা দিতে অস্বীকার করায় ওই দিনই সামসেরের উপরে গোর্খার বাহিনী চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ সামসেরের। আরও অভিযোগ, তাঁর দোকানে থাকা সব মাংসে ফিনাইল ঢেলে দেওয়া হয়। এ নিয়ে এন্টালি থানায় অভিযোগও করেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও ভাবেই দাবি মতো টাকা দেননি সামসের। অভিযোগ, সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন ফের দলবল নিয়ে সামসেরের দোকানে আসেন গোর্খা। সামসের ও তাঁর এক আত্মীয়ের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। এলাকার অন্য ব্যবসায়ীরাও রুখে দাঁড়ান। বাধা পেয়েই শুরু হয় গোলমাল।

ডি সি দে রোডের থেকে প্রায় কুড়ি ফুট উপর দিয়ে রেল লাইন গিয়েছে। অভিযোগ দমদম থেকে পার্ক সার্কাস যাওয়ার কর্ড লাইনের উপরে উঠে রেল লাইনের পাথর ছুড়তে শুরু করে গোর্খার দলবল। তখন নীচ থেকেও পাল্টা ইট ও বোতল ছোড়া শুরু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ নীচের দলে যোগ দেয় বিবিবাগান এলাকার একটি দল। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। দু’পক্ষের গোলমাল শুরু হতেই আশপাশের দোকান বন্ধ হতে শুরু করে। রাস্তায় তখন ছড়িয়ে রয়েছে রেল লাইনের পাথর ও কাচের টুকরো। খবর যায় এন্টালি থানায়। ট্যাংরা ও এন্টালি থানার পুলিশ পৌঁছে কয়েকজনকে আটক করে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা এ দিন ক্ষোভ উগড়ে দেন। অধিকাংশ বাসিন্দার অভিযোগ, গোর্খার উপদ্রবে এলাকায় ব্যবসা করা যায় না। দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবেই তোলা আদায় করছেন তিনি। পুলিশকে বারবার জানানো হলেও গোর্খাকে ধরেনি পুলিশ। সামসের বলেন, ‘‘গোর্খা আমার থেকে টাকা দাবি করেছিল। আমি না দেওয়ায় বলতে থাকে আমি খারাপ মাংস বিক্রি করি। এর পরেই রবিবার আমাকে মারধর করে। মাংসে ফিনাইল দিয়ে দেয়। পুলিশকেও সে কথা জানিয়েছিলাম। সোমবার সকালে হঠাৎ গোর্খার দল দোকানে ভাঙচুর চালায়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, রেল লাইনের উপরে ও নীচে বা়ড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন