ট্যাক্সির গায়ে লেখা ‘নো রিফিউজাল’। অথচ মহানগরের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই জানেন, ট্যাক্সি ধরতে গেলে প্রত্যাখ্যানই ‘স্বাভাবিক’! এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই প্রশ্ন, ‘নো রিফিউজাল’ লেখার অর্থ কী?
কিন্তু সেই প্রশ্ন দূরে সরিয়ে আরও ব়়ড় প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ-প্রশাসন এই ‘নো রিফিউজাল’ লেখা মেনে নিচ্ছে কেন? তা হলে কি ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যান করবে, সে কথাটাই ঘুরিয়ে মেনে নেওয়া হচ্ছে না? নিয়ম অনুযায়ী তো একান্ত ঠেলায় না পড়লে প্রত্যাখ্যান করা যায় না।
কলকাতায় ট্যাক্সির প্রত্যাখ্যান নতুন নয়। মদন মিত্র পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীন নীল-সাদা ট্যাক্সি নামানো হয়। তার গায়ে লেখা হয় ‘নো রিফিউজাল’। তার পরে এ নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। বহু ক্ষেত্রে হলুদ ট্যাক্সিচালকদের একাংশ ‘নো রিফিউজাল’ ট্যাক্সিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। যাত্রীর গন্তব্য পছন্দ না হলেই তাঁরা দেখিয়ে দিতেন নীল-সাদা ট্যাক্সি। পরবর্তী কালে হলুদ ট্যাক্সির গায়েও ‘নো রিফিউজাল’ লেখা বাধ্যতামূলক হয়। কিন্তু শহরের নানা বয়সের মানুষের বক্তব্য, ওই লেখাই সার। মর্জিমাফিক গন্তব্য ছাড়া কেউ যেতে চান না।
ট্যাক্সিমালিক সংগঠনের নেতারা অবশ্য এ ব্যাপারে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ মনোভাব নিয়ে চলছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রত্যাখ্যান না করতে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু ট্যাক্সিচালকেরও কিছু সমস্যা থাকে। পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের একাংশ জানাচ্ছেন, ‘নো রিফিউজাল’ লেখার অর্থ ঘুরপথে প্রত্যাখ্যানকে সুযোগ দেওয়া নয়। বরং ট্যাক্সি যে প্রত্যাখ্যান করতে পারে না, সে ব্যাপারে সচেতন করা। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ পেলে সব সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রয়োজনে যাত্রীরা ১০৭৩ নম্বরে ফোন করেও অভিযোগ জানাতে পারেন। ফেসবুক-টুইটারেও অভিযোগ নেওয়া হয়।’’
পুলিশের একাংশ মনে করাচ্ছে, প্রত্যাখ্যানের জন্য ৩০০০ টাকা জরিমানা চালু হওয়ায় বদল এসেছিল এই ছবিতে। কিন্তু প্রশাসনের শীর্ষ স্তর সেই নিয়ম বদলে দেওয়ায় আগের অবস্থা ফিরে এসেছে। এখন বহু ক্ষেত্রে পুলিশ চাইলেও কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে না।