নতুন ভাড়া চালু হতেই নয়া হয়রানি

মিনিবাস সংগঠনগুলি অবশ্য প্রতি পর্যায়ে ১ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছিল। এ দিন ‘মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ মালিকদিরে নিয়ে বৈঠক করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৩:৩৭
Share:

বৃষ্টি পড়তেই চড়া ভাড়া হেঁকেছে ট্যাক্সি। চলছে দর কষাকষি। সোমবার। ছবি: শৌভিক দে

বাস-মিনিবাস এবং ট্যাক্সির সংশোধিত ভাড়া চালু হলেও সর্বত্র পৌঁছয়নি নতুন তালিকা। সংশোধিত হয়নি বেশির ভাগ ট্যাক্সির মিটারও। যার জেরে সোমবার চরম অব্যবস্থা ও হয়রানির শিকার হলেন যাত্রী থেকে চালক, সকলেই।

Advertisement

বহু জায়গায় সংশোধিত তালিকা হাতে না পাওয়ায় যাত্রীদের থেকে নতুন ভাড়া চাইতেই পারলেন না কন্ডাক্টরেরা। আবার বেশ কিছু রুটে নিজেদের মতো তালিকা বানিয়ে নতুন ভাড়া আদায় করতে গিয়ে প্রবল বাধার মুখে পড়তে হল বাসচালক ও কন্ডাক্টরদের। বেলঘড়িয়া-সেক্টর ৫, দক্ষিণেশ্বর-সল্টলেক, বরাহনগর-ধর্মতলার মতো বেশ কিছু রুটে কন্ডাক্টরেরা সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী নতুন তালিকা তৈরি করে যাত্রীদের কাছে ভাড়া দাবি করেন। কিন্তু তালিকায় সরকারি আধিকারিকের সই এবং সিল না থাকায় যাত্রীরা আপত্তি তোলেন। পরে যে সব রুটে এখনও সংশোধিত ভা়ড়ার তালিকা পৌঁছয়নি, সেখানে বর্ধিত বাসভাড়া আদায় না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বাসমালিক সংগঠনগুলির তরফে। মুকুন্দপুর-হাওড়া, ব্যারাকপুর-বাবুঘাট, পর্ণশ্রী-ডালহৌসি, সরশুনা-হাওড়ার মতো ১৫-১৬টি রুটে নতুন ভাড়ার তালিকা পৌঁছে যাওয়ায় এ দিন থেকেই বর্ধিত ভাড়া আদায় শুরু হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যাত্রীরা সরাসরি আপত্তি না তুললেও তালিকা পরীক্ষা করতে চেয়েছেন অনেকেই। পাশপাশি, পরিষেবা নিয়েও সরব হতে দেখা গিয়েছে বহু যাত্রীকে। বাড়তি যাত্রী তোলার তাগিদে বাস একটু থমকে গেলেই সরব হয়েছেন যাত্রীরা।

মিনিবাস সংগঠনগুলি অবশ্য প্রতি পর্যায়ে ১ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছিল। এ দিন ‘মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ মালিকদিরে নিয়ে বৈঠক করে। পরে সংগঠনের তরফে ভাড়া সংশোধনের দাবি নিয়ে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে নতুন করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠির উত্তর আসা পর্যন্ত নতুন ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি মুলতুবি রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের দুই যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ঘোষ এবং প্রদীপনারায়ণ বসু।

Advertisement

শহরের ২০ হাজার হলুদ ট্যাক্সির বেশির ভাগেরই মিটার সংশোধিত না হওয়ায় এ দিন অধিকাংশ জায়গাতেই ট্যাক্সিচালকেরা মিটারে যাত্রী তুলতে রাজি হননি। চালকদের অভিযোগ, নতুন ভাড়ার তালিকা আসেনি। তা ছাড়া, মিটার ‘ক্যালিব্রেট’ করা হয়নি। ফলে পুরনো মিটারে যাত্রীদের তুলে ঝামেলায় জড়াতে চান না তাঁরা।

যদিও পরিবহণ দফতরের দাবি, সংশোধিত তালিকা শহরের স্বীকৃত ট্যাক্সি ইউনিয়নগুলির হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ট্যাক্সিতে উঠলে ৩০ টাকা এবং প্রতি ২০০ মিটারে ৩ টাকা হারে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত সংশোধিত ভাড়ার তালিকা সব ইউনিয়নে গিয়েছে। ফলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

ট্যাক্সির ওয়েটিং চার্জ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ওয়েস্টবেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব। তা ছাড়া, কত দিনে নতুন মিটার বসবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে তাঁর। এক পরিবহণকর্তা জানান, মিটার বদলের কাজ সময়সাপেক্ষ। বেলতলা, কসবা, সল্টলেক এবং বেহালা ছাড়াও কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল গুহ অবশ্য সংশোধিত ভাড়ার হার নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির জেরে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে ধর্মঘটের পথ থেকে এখনও সরে আসেনি ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রতশঙ্কর ঘোষ জানান, ১৮ জুন থেকে তাঁরা ধর্মঘটে যাচ্ছেন। পরিবহণমন্ত্রী যদিও দাবি করেছেন, “নতুন ভাড়া কার্যকর করা নিয়ে কোথাও সমস্যা নেই। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ওই ভাড়া কার্যকর করা গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন