পথে ট্যাক্সি দেখতে পেয়েই ভাঙচুর, আতঙ্কিত শিশু যাত্রী

ইউনিয়ন নেতাদের কথা অমান্য করে রাস্তায় ট্যাক্সি চালানোয় মারমুখী আন্দোলনের শিকার হতে হল এক ট্যাক্সিচালককে। প্রথমে ধাক্কাধাক্কি ও পরে ট্যাক্সির সামনের কাচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ল ওই ট্যাক্সিতে থাকা বছর পাঁচেকের এক শিশুকন্যা। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার মার্কুইস স্ট্রিট ও মির্জা গালিব স্ট্রিটের সংযোগস্থলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:১০
Share:

ভাঙচুর হওয়া সেই ট্যাক্সি।

ইউনিয়ন নেতাদের কথা অমান্য করে রাস্তায় ট্যাক্সি চালানোয় মারমুখী আন্দোলনের শিকার হতে হল এক ট্যাক্সিচালককে। প্রথমে ধাক্কাধাক্কি ও পরে ট্যাক্সির সামনের কাচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ল ওই ট্যাক্সিতে থাকা বছর পাঁচেকের এক শিশুকন্যা। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার মার্কুইস স্ট্রিট ও মির্জা গালিব স্ট্রিটের সংযোগস্থলে।

Advertisement

সেই ট্যাক্সিচালক সিঁথির বাসিন্দা তারক রায় জানান, এ দিন সকালে ওই মোড়ের কাছে পৌঁছনো মাত্রই সামনে থেকে জনা পাঁচেক যুবক ছুটে এসে ট্যাক্সি থামাতে বলে। তিনি বলেন, “ওরা প্রথমেই আমাকে গালিগালাজ করে। পাশাপাশি প্রশ্ন করতে থাকে, কেন ট্যাক্সি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছি?” তারকবাবুর বক্তব্য, তিনি আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন ট্যাক্সিতে থাকা সিঁথির বাসিন্দা পাঁচ বছরের আয়েশা পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। কয়েক মাস যাবৎ তিনি রোজই ওই শিশুকে স্কুলে নিয়ে আসেন। রাস্তা থেকে কোনও যাত্রী তিনি তোলেননি।

কিন্তু তার পরেও ওই যুবকদের হুমকি ও গালিগালাজ থামেনি বলে অভিযোগ। এ দিন ট্যাক্সিতে ছিলেন ওই শিশুর বাবা নীলাঞ্জন দাস পোদ্দার ও দাদু মৃদুল দাস পোদ্দার। তাঁরাও ওই যুবকদের বোঝাতে যান ট্যাক্সি না বেরোলে স্কুলে আসা হত না ওই শিশুর। নীলাঞ্জনবাবু জানান, এর পরেই আরও খেপে যায় ওই যুবকেরা। অভিযোগ, উত্তেজিত ওই যুবকের দল বলতে থাকে, একুশ জন ট্যাক্সিচালককে না ছাড়া পর্যম্ত শহরের রাস্তায় কোনও ট্যাক্সি চলবে না।

Advertisement

এর মধ্যেই তর্কাতর্কি শুরু হয়। গাড়ি থেকে নেমে আসেন তারকবাবু ও নীলাঞ্জনবাবু। অভিযোগ, এর পরে আচমকাই রাস্তার পাশে পড়ে থাকা লাঠি দিয়ে ট্যাক্সির সামনের কাচে বারবার মারতে শুরু করে কয়েক জন। তখন ট্যাক্সিতেই বসে ছিলেন বৃদ্ধ মৃদুলবাবু ও ওই শিশু। চিৎকার ও কাচ ভাঙার শব্দে ভয়ে কাঁদতে শুরু করে আয়েশা। চার দিকে এত হইচই দেখে কিছুটা অসুস্থও হয়ে পড়ে শিশুটি। এত সবের পরেও ওই যুবকদের ভাঙচুর থামেনি বলে অভিযোগ।


আয়েশা।

ইতিমধ্যে কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা চলে আসেন ঘটনাস্থলে। লোকজন জড়ো হয়ে যাওয়ায় এর পরে চলে যায় ওই যুবকেরা।

ঘটনার পরেই তারকবাবু পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। তবে তারকবাবু জানিয়েছেন, ওই যুবকদের হাতে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছিল না। ফলে তারা কোন দলের, তা বোঝা যায়নি।

অন্য দিকে, এ দিনই গ্রেফতার হওয়া ২১ জন ট্যাক্সিচালকের মামলার শুনানি ছিল ব্যাঙ্কশাল আদালতে। সেখানে এ প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিএমের অনাদি সাহুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সরকারে আসার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্রেরা কত গাড়ি ভাঙচুর করেছেন, পুরনো কাগজ খুললেই দেখা যাবে।” তাঁর বক্তব্য, “আন্দোলনকে বিপথে চালাতে এবং মানুষের কাছে ভুল বার্তা দিতে ওদের লোকেরাই ট্যাক্সি ভাঙচুর করেছে।”

—নিজস্ব চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement